মেয়েদের ওয়েট ট্রেনিং কেন জরুরী

প্রকাশ : ১৮ মে ২০১৮, ১৯:১৬

জাগরণীয়া ডেস্ক

৩০ পেরোলেই ফিটনেস হরমোন বা হিউম্যান গ্রোথ হরমোন কমতে শুরু করে মেয়েদের। সেই সাথে পেশীর ক্ষয়৷ আমেরিকান কলেজ অব স্পোর্টস মেডিসিনের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ৩০–৫০ বছর বয়সের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ পেশী ক্ষয়ে যায়৷  ৬০–৭০ বছর বয়সের মধ্যে পেশীর জোর কমে প্রায় ১৫ শতাংশ৷ পরের ১০ বছরে কমে ৩০ শতাংশ৷

এমনিতেই মেয়েদের শরীরে পেশীর তুলনায় ফ্যাট বেশি থাকে৷ সেই পেশীও যদি ক্ষয় হতে শুরু করে, ক্যালোরি খরচের হার কমে যায়৷ টানটান ভাব কমে শরীরের৷ চর্বি জমে থলথলে হতে শুরু করে৷ পেটে–কোমরে জমে বেশি৷ জমে শরীরের ভিতরের প্রত্যঙ্গে৷ তার হাত ধরে বাড়ে ডায়াবেটিস, হাই কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, ফ্যাটি লিভার, অস্টিওপোরোসিস ইত্যাদি নানা রোগের আশঙ্কা।

সমাধান

সমাধান ওয়েট ট্রেনিং এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ সুষম খাবার৷

আমেরিকান কলেজ অব স্পোর্টস মেডিসিনের স্টাডি অনুযায়ী, নিতান্ত বৃদ্ধও যদি সঠিক ভাবে ওয়েট ট্রেনিং করেন, ৩–৪ মাসের মধ্যে পেশীর শক্তি ২–৩ গুণ হয়ে যায়৷ কিছু ক্ষেত্রে মাসল মাসও বাড়ে৷ তার হাত ধরে বাড়ে রেস্টিং ক্যালোরি লস, কমে ফ্যাট ও রোগের আশঙ্কা। ভাল ঘুম হয়৷ সহজ হয় স্ট্রেস সামলানো৷

 জিমে যাওয়ার সময় নেই

যাবেন না৷ বডি ওয়েট ট্রেনিং করুন৷ শরীরের ওজনকে ব্যবহার করতে শিখলে স্ট্রেন্থ ট্রেনিংয়ের পুরো সুবিধে পাবেন৷ 

৫ মিনিট স্পট জগিং, স্টেপ জাম্প বা স্কিপিং করলেন কি নাচলেন, স্কোয়াট, পুশআপ, প্লাঙ্ক করলেন বা হিপ ব্রিজ, ক্রাঞ্চেস তো কখনও বেঞ্চ ডিপ, ওয়াকিং লাঞ্জেস, জাম্পিং জ্যাক, বক্স জাম্পিং৷ বাচ্চাকে কোলে নিয়ে হাঁটলে, দু’হাতে ভারী ব্যাগ বইলে, সিঁড়ি ওঠানামা করলে, এমনকী জোরে হাঁটলেও কার্ডিও–র পাশাপাশি স্ট্রেচিং ও পেশীর ওয়ার্কআউট হয়৷ তবে ঘরে ব্যায়াম করুন কি জিমে, শুরু করার আগে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে নেবেন৷ 

ওয়ার্কআউটের প্রস্তুতি

• ডাক্তারের কাছে জেনে নিন কোন ব্যায়াম করতে পারবেন আর কোনটা নয়৷ বিশেষ করে বয়স বেশি হলে, কোনও ওষুধ খেলে, অসুখ–বিসুখ বা আঘাতের ইতিহাস থাকলে৷

• পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে, সেই মানসিক প্রস্তুতি নিন৷

• নো পেইন নো গেইন–এর থিওরি চলবে না৷ যন্ত্রণা হলে থেমে যেতে হবে৷

• ভাল করে ওয়ার্মআপ করতে হবে৷ যত বয়স বেশি, তত বেশি সময় লাগবে৷

• পার্সোনাল ট্রেনার রাখতে না চাইলে, ভাল করে শিখে তবে নামতে হবে কাজে৷​

কীভাবে ওয়ার্ক আউট

• ৫–১০ মিনিট জোরকদমে হেঁটে ওয়ার্ম আপ করুন৷ কুল ডাউন করুন স্ট্রেচিং করে৷

• সঠিক পদ্ধতিতে ব্যায়াম করুন৷ না হলে চোট যেমন লাগতে পারে, ফলও অত ভাল পাবেন না৷  প্রথম দিকে কম ওজন নিয়ে আস্তে আস্তে করুন৷

• এক একটি বডি পার্টের জন্য ২–৩টি ওয়েট ট্রেনিংই যথেষ্ট৷ খেয়াল রাখবেন যাতে এক ঘণ্টা বা বড়জোর দেড় ঘণ্টা মধ্যে ওয়ার্কআউট শেষ হয়৷

• ওজন তোলা–নামানোয় তাড়াহুড়ো করবেন না৷ ৩ কাউন্ট করে তুলুন, একটু হোল্ড করে, ৩ কাউন্ট করে নামান৷ এক একটি ব্যায়াম ৮–১২ বার করে মোটামুটি ২–৩টি সেট করুন৷

• এমন ওজন তুলুন যাতে লাস্ট দুটো রিপিটেশনের সময় পেশী ক্লান্ত হয়,  কিন্তু তাও ওজনটা তোলা যায়৷ এতে অভ্যাস হয়ে গেলে হাতের ক্ষেত্রে এক–দু’পাউন্ডের মতো ওজন বাড়ান৷ পায়ের ক্ষেত্রে বাড়াবেন দু’পাউন্ডের মতো৷

• শ্বাস–প্রশ্বাসের দিকে নজর দিন৷ রেজিস্ট্যান্সের এগেনস্টে ওয়ার্কআউটের সময়, যেমন ওজন তোলা, ঠেলা বা টানার সময় শ্বাস ছাড়তে হবে৷

খাওয়া–দাওয়া

• বায়ামের আগে চিনি ছাড়া কালো কফি খান৷ ওয়ার্কআউটের ক্ষমতা প্রায় ৩০ শতাংশ বাড়বে৷

• হেভি ওয়ার্কআউটের ৩০–৪৫ মিনিট আগে অল্প করে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেটজাতীয় খাবার ও প্রোটিন খেতে হবে৷

• ব্যায়াম শেষ করার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গ্লুকোজ, কলা বা টাটকা ফলের রস খান৷ এর ১০–২০ মিনিট পর প্রোটিন ও কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাবেন৷ সবচেয়ে ভাল হয় ব্যায়াম শেষ করার ৪৫–৬০ মিনিটের মধ্যে খেয়ে নিলে৷

• দিনে বার ছয়েক খাবেন৷ প্রোটিনসমৃদ্ধ সুষম খাবার৷ ডিনার করবেন তাড়াতাড়ি৷

সূত্র: আনন্দবাজার

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত