‘ওবেসিটি’ বা অতিস্থূলতা যখন রোগ

প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:৫৩

জাগরণীয়া ডেস্ক

কিছু ভালো লাগছে না, কিছু একটু খাই। কি করবো বুঝতে পারছি না, কিছু একটা খাচ্ছি। প্রয়োজন নেই তবুও খাচ্ছি। নানা কারণে-অকারণে খাওয়াটাই যেন একটা কাজে পরিণত হয়ে গেছে। আর পরিণতিতে আস্তে আস্তে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বাড়ছে এবং তা অস্বাভাবিক হারে। এই হচ্ছে ‘ওবেসিটি’ অর্থাৎ অতিস্থূলতা।

ওবেসিটি শরীরের এক বিশেষ অবস্থা। এই অবস্থায় শরীরে অতিরিক্ত স্নেহ বা চর্বি জাতীয় পদার্থ জমা হয়। স্বাস্থ্যের ওপর এর ক্ষতিকারক প্রভাব পড়ার ফলে আয়ু কমে যেতে পারে এবং একই সঙ্গে বিভিন্ন শারীরিক নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। বডি মাস ইনডেক্স হলো শরীরের উচ্চতা ও ওজনের আনুপাতিক হার, যা দিয়ে বোঝা যায় যে কোনো ব্যক্তি মাত্রাধিক ওজন বিশিষ্ট কি না। যদি কারো বডি মাস ইনডেক্স ২৫ kg/m2 থেকে ৩০ kg/m2 মধ্যে থাকে তখন তাকে স্থূলকায় বা মোটা বলা যেতে পারে। আর যখন বডি মাস ইনডেক্স ৩০ kg/m2 বেশি থাকে তখন তাকে অতিস্থূলকায় বা অতিরিক্ত মোটা বলা হয়।

স্থূলতা বৃদ্ধির কারণে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সার এবং অস্টিও আর্থারাইটিস হতে পারে। অতিরিক্ত ক্যালোরিযুক্ত খাদ্যগ্রহণ, কায়িক শ্রমের অভাব, বংশগত কারণে কিছু ক্ষেত্রে জিনের চরিত্রের পরিবর্তন, হরমোন গ্রন্থির গণ্ডগোল, ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, মানসিক অসুস্থতা ইত্যাদিকেই স্থূল বা মোটা হয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী করা হয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, অনেকে খুব কম পরিমাণে খাচ্ছেন অথচ ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর জন্য ধীর বিপাকক্রিয়া বা ধীরে হজম হওয়াই দায়ী। পাতলা ব্যক্তিদের তুলনায় স্থূলকায় ব্যক্তিদের শরীরে বেশি শক্তি সঞ্চিত থাকায় তারা গড়ে বেশি পরিমাণ কর্মশক্তি ব্যয় করতে পারে।

সুষম খাবার গ্রহণ এবং শারীরিক পরিশ্রমই হলো স্থূলতা কমানোর প্রথম পদক্ষেপ। সীমিত খাদ্যগ্রহণ এবং শারীরিক পরিশ্রমে কাজ না হলে এর পাশাপাশি স্থূলতা হ্রাসের ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। এ ধরনের ওষুধ খাওয়ার ফলে ক্ষুধার পরিমাণ অনেকটাই কমে আসে এবং স্নেহ ও চর্বি জাতীয় পদার্থের বিপাকের হার বাধা পায়। তুলনামূলকভাবে যারা বেশি মোটা বা স্থূল, তাদের ক্ষেত্রে সার্জারির সাহায্য নেয়া যেতে পারে বা পরিপাকতন্ত্রে বেলুন ব্যবহার করে পাকস্থলীর আয়তন বা অন্ত্রের আয়তন কমিয়ে আনা যেতে পারে। এর ফলে স্থূল ব্যক্তি অল্প খাবারেই তৃপ্ত হতে পারে ও খাদ্য থেকে খাদ্যগুণ গ্রহণের ক্ষমতাও কমে আসে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বর্তমানে সারা বিশ্বে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের স্থূলতার সমস্যা দিন দিন বাড়ছে এবং তা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সুস্থ ও স্ট্রেসমুক্ত জীবনযাপনে সুশৃঙ্খলতা, সুষম খাবার গ্রহণ, ব্যায়াম আর মানসিক প্রশান্তি অতীব জরুরি।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত