অতিরিক্ত লাল মাংস খাওয়ার অপকারিতা ও করণীয়

প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০১৭, ২১:০৫

জাগরণীয়া ডেস্ক

প্রাণীজ আমিষের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং পুষ্টিতে ভরপুর একটি খাবার মাংস। মাংসে প্রোটিন, জিংক, ফসফরাস, আয়রন, বি১২, বি৬,সোডিয়াম এবং ফ্যাট প্রভৃতি উপাদান থাকে। মাংসে উপস্থিত জিঙ্ক শরীরের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে, লাল মাংস থেকে যে আয়রন পাওয়া যায় তা রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরি করে -শরীরে অক্সিজেন এবং কার্বন ডাই-অক্সাইড পরিবহনে সাহায্য করে।এছাড়াও লাল মাংসে থাকে ভিটামিন বি যা স্নায়ুকোষকে সচল রাখে।

কিন্তু অতিরিক্ত লাল মাংস খেলে আমাদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায়। রেড মিট হচ্ছে সেসব মাংস যা সাধারণত কাচা অবস্থায় লাল দেখায়, আর রান্নার পরও সাদা হয় না। লাল মাংস বলতে আমরা মূলত গরু, খাসীর মাংসকে বুঝে থাকলেও সাধারণত সকল স্তন্যপায়ী প্রাণীর মাংস লাল হয়ে থাকে।

লাল মাংসে স্বাস্থ্যঝুঁকি
১। অতিরিক্ত লাল মাংস গ্রহণ করলে খাদ্যনালি, ফুসফুস, অগ্ন্যাশয়, পাকস্থলী, স্তন এবং মলাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
২। রেড মিটে প্রচুর পরিমাণে সম্পৃক্ত ফ্যাট থাকায় এটি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়, রেড মিট উচ্চ রক্তচাপের জন্য অনেকাংশে দায়ী, তাছাড়া শরীরের কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় ফলে শরীরের ওজন বেড়ে যায় এবং এ থেকে স্থূলতা জন্ম দেয়।
৩। রেড মিট ব্রেইনের ক্ষতি সাধন করে স্মৃতি শক্তি ও চিন্তা শক্তি কমিয়ে দেয়।
৪। এটি আমাদের পরিপাক বা হজম ক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটব্যথা ও ডায়রিয়া, গ্যাস্ট্রিক এনমকি আলসারও হতে পারে।
৫। লাল মাংসে টিনিয়া সেলিনাস নামক একধরনের প্যারাসাইট থাকে যা অন্ত্র, পাকস্থলী, যকৃত প্রভৃতি জায়গায় প্রবেশ করে আমাদের অসুস্থ করে দেয় ।
৬। অতিরিক্ত লাল মাংস রক্তনালির ঘনত্ব বাড়ায় যার ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
৭। লাল মাংসে থাকে অধিক ট্রাইসেরাইড,কোলেস্টেরল ও পিউরিন তাই হৃদরোগ, বাত, উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের লাল মাংস কম খাওয়া উচিত।
৮। ডায়বেটিক পেশেন্ট দের জন্য অর্থাৎ যারা ইনসুলিন নিয়ে থাকেন, তাদের জন্য লাল মাংস ক্ষতির কারণ হতে পারে।

করণীয়
কিন্তু তাই বলে রেড মিট যে একেবারেই খাওয়া যাবে না, তা কিন্তু নয়। তাছাড়া সামনে কুরবানি ঈদে অনেকেরই বাসায় প্রচুর রেড মিট রান্না হবে। তাহলে করণীয় কি? এক্ষেত্রে সীমিত পরিমাণে মাংস খাওয়ার সাথে সাথে কিছু ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে

১। অতিরিক্ত তেল মশলা মাংস রান্নায় ব্যবহার করা যাবে না, কেননা অতিরিক্ত তেল মশলা আমাদের হজমে বাধা দেয়।
২। মাংস রান্না করার সময়ে অবশ্যই অতিরিক্ত চর্বি ফেলে দিতে হবে, অনেকে চর্বি খেতে পছন্দ করেন, কিন্তু চর্বি খাওয়া উচিত না।
৩। আমরা অনেকেই পানি খেতে চাই না, মাংস খেলে বেশি করে পানি পান করতে হবে, এতে হজম প্রক্রিয়া স্বাভাবিক থাকবে। এছাড়াও সাথে প্রচুর শাকসবজি খেতে হবে যা আমাদের শরীরের ভিটামিনের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে।
৪। কোনো দিন বেশি মাংস খাওয়া হয়ে গেলে তা ব্যালেন্স করতে সবজি, সালাদ, লেবু, ফল বেশি করে খেতে হবে।
৫। নিয়মিত প্রেশার ও কোলেস্টেরল লেভেল পরীক্ষা করা ভালো এবং লাল মাংস খেলে দেহে অতিরিক্ত মেদ জমে তাই প্রতিদিন রুটিনের সাথে সামান্য কিছু এক্সারসাইজ রাখতে হবে অর্থাৎ কিছু সময় হাঁটাহাটি বা সামান্য ব্যায়াম।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত