কর্মজীবী নারীর সুস্থতার জন্য ১১ করণীয়

প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০১৭, ১৮:৫২

জাগরণীয়া ডেস্ক

নারী এখন আর শুধু বাড়ির গণ্ডিতে বসে নেই। বহু নারীকেই এখন কর্মক্ষেত্রের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। আর এতে পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যাচ্ছে না পুষ্টিকর খাবার ও সুষ্ঠু জীবনযাপনের জন্য। এছাড়া কর্মক্ষেতের মানসিক চাপও নানা সমস্যা সৃষ্টি করছে। এসব সমস্যা লাঘবে কয়েকটি পরামর্শ থাকছে এ লেখায়। 

১. সারাদিন কর্মতৎপর থাকুন
কর্মক্ষেত্রে কিংবা বাড়িতে কখনোই দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা বা শারীরিক পরিশ্রমবিহীন থাকা উচিত নয়। এক্ষেত্রে কিছুক্ষণ পর পর একটু হেঁটে নেওয়া উচিত। দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে বা কাগজপত্রে কাজ করতে হলে প্রতি আধ ঘণ্টা পর পর কমপক্ষে এক মিনিট হেঁটে নিন। সুযোগ থাকলে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করার বিষয়টি বিবেচনা করুন। 

২. স্বাস্থ্যসম্মত খাবার রাখুন
আপনার সারাদিন খাবার প্রয়োজন হলেই যে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাবেন এমন কোনো কথা নেই। তাই আপনার অস্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাস বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। এক্ষেত্রে আপনার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত তাজা ফলমূল ও সবজি। বাদ দিন অতিরিক্ত তেলে ভাজা ও পোড়া খাবার। 

৩. শারীরিক অনুশীলনের অভ্যাস
সুস্থ থাকার জন্য দেহ সচল রাখা প্রয়োজন। নিয়মিত কিছু শারীরিক অনুশীলন বা পরিশ্রম করা প্রয়োজন। আপনার সুবিধামতো সময়ে শারীরিক অনুশীলনের অভ্যাস গড়তে পারেন। এক্ষেত্রে ২০ মিনিট জোরে হাঁটা বা দৌড়ানোর মতো অভ্যাস করতে পারলে খুবই ভালো হয়। 

৪. সকালে সমৃদ্ধ নাশতা
সকালের নাস্তা সারাদিনের সুস্থতার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। তাই নিয়মিত সকালে নাশতা করুন। এক্ষেত্রে তাজা ও শুকনো ফলমূলের পাশাপাশি পর্যাপ্ত প্রোটিনও রাখুন নাশতায়। 

৫. পর্যাপ্ত পানি পান করুন
দেহের সুস্থতার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত। কিন্তু কর্মজীবী নারীরা অনেকেই পর্যাপ্ত পানি পান করেন না। ফলে দেহে নানা বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। সুস্থ থাকার জন্য কর্মক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় বিশুদ্ধ পানি পান করা উচিত। 

৬. উন্নতি লিপিবদ্ধ করুন
আপনার সুস্থ জীবনযাপন ও শারীরিক অনুশীলনের প্রভাব দেহে কতোখানি পড়ছে তা লক্ষ্য করুন। প্রয়োজনে দেহের ওজন ও অন্যান্য বিষয়গুলো নিয়মিত লিপিবদ্ধ করুন। এতে সুস্থ জীবনযাপনের প্রতি আপনার আগ্রহ বাড়বে। 

৭. পরিশোধিত কার্বহাইড্রেট কমান
দেহে কার্বহাইড্রেটের প্রয়োজন রয়েছে। তবে তা যেন ফলমূল ও আঁশযুক্ত হয়, সেদিকে লক্ষ রাখুন। বিস্কুট, চকলেট, মধু, সাদা ময়দা, সাদা ভাত ইত্যাদি খাবার কম করে খান। বিশেষ করে ময়দা ও চিনির তৈরি খাবার দেহের রক্তের শর্করার মাত্রা বাড়ায়, যা বাড়তি ইনসুলিন উৎপাদন করে। এতে দেহের মেদ বৃদ্ধি পায়। তার বদলে বাদামি আটার তৈরি খাবার, লাল চালের ভাত (ঢেঁকি ছাটা) ইত্যাদি বেশি করে খান। 

৮. মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রম নয়
শারীরিক পরিশ্রম করার একটি নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে। খুব কম শারীরিক পরিশ্রম যেমন করা উচিত নয় তেমনই বাড়তি শারীরিক পরিশ্রমও করা উচিত নয়। একইভাবে মাত্রাতিরিক্ত জিম কিংবা ফ্রিহ্যান্ড ব্যায়ামও করা উচিত নয়। 

৯. ব্যায়ামের আগে নাশতা
খালি পেটে ব্যায়ামের মতো শারীরিক অনুশীলন করা উচিত নয়। ব্যায়ামের আগে কিছু ফলমূল ও স্ন্যাকস খেয়ে নেওয়া উচিত। এজন্য কলার মতো ফল হতে পারে আদর্শ। এটি যেমন তাড়াতাড়ি হজম হয় তেমন এনার্জিও যোগায়। 

১০. বসার আসন ঠিক রাখুন
কর্মক্ষেত্রে আপনি যে আসনটিতে দিনের বহু সময় ধরে বসছেন তা লক্ষ করুন। আপনার মেরুদণ্ড কি সোজা নাকি বাঁকা হয়ে রয়েছে? আপনার সামনের কম্পিউটার থাকলে সেটি কি চোখ বরাবর রয়েছে? নাকি এটি দেখার জন্য ঘাড় বাঁকাতে হচ্ছে? কর্মক্ষেত্রে আপনার আসনটি ঠিক না থাকলে তা মেরুদণ্ডে ব্যথাসহ নানা সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এগুলো যদি আরামদায়ক না হয় তাহলে তা দ্রুত ঠিক করুন। 

১১. হাসিখুশি থাকুন
হাসি আমাদের বহু রোগ থেকে দূরে রাখে। কর্মক্ষেত্রে মানসিক চাপ কমাতে হাসি হতে পারে কার্যকর অস্ত্র। কর্মক্ষেত্রে যেহেতু আপনি বড় একটি সময় কাটান তাই কর্মক্ষেত্রে হাসিখুশি থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। হাসলে দেহ থেকে ভালো হরমোন নির্গত হয়, যা মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। 

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত