জন্মগত হৃদরোগ

প্রকাশ : ১১ জুলাই ২০১৭, ২০:৩৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

জন্মের সময়ই অনেক শিশু হৃদপিন্ডের সমস্যা নিয়ে জন্মায়, সহজ ভাবে বোঝানোর জন্য চিকিৎসকগণ অনেক সময় একে শিশুর হার্ট এ ফুটা/ছিদ্র আছে এমন শব্দ ব্যবহার করেন। এধরণের রোগ হলে শিশু জন্মের কিছুদিন পর থেকেই শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যায় ভোগে এবং কেউ কেউ খাবার সময় বা কান্না করলে নীল/কালচে-নীল হয়ে যায়। এরকম কয়েকটি রোগ এখানে আলোচনা করা হল।

এ,এস,ডি
একে এট্রিয়াল সেপ্টাল ডিফেক্ট বলা হয়। হার্ট এর উপরের অংশের দুটি প্রকোষ্ঠের মাঝে একটি অস্বাভাবিক ফুটো থাকার নামই এ,এস,ডি। এধরণের রোগ হলে শিশু জন্মের কিছুদিন পর থেকেই শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগে এবং শিশুর বৃদ্ধি ও নিয়মিত হয়না। এ,এস,ডি ছোটো হলে ২-৫ বছরের মধ্যে নিজে নিজেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

বড় এ,এস,ডি হলে অথবা নিজে নিজে বন্ধ না হলে অপারেশনের দ্বারা অথবা ক্যাথেটার করে ডিভাইস ক্লোজার করা যায়। অনেক সময় পরিণত বয়স বা বার্ধক্যে এসে এই রোগটি ধরা পড়ে। ইকোকার্ডিওগ্রাম পরীক্ষা দ্বারা এ,এস,ডি নির্ণয় করা যায়।

ভিএসডি
একে ভেন্ট্রিকুলার সেপ্টাল ডিফেক্ট বলা হয়। হার্ট এর নীচের অংশের দুটি প্রকোষ্ঠের মাঝে একটি অস্বাভাবিক ফুটো থাকার নামই ভি,এস,ডি। এধরণের রোগ হলেও শিশু জন্মের কিছুদিন পর থেকেই শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যায় ভুগে, শিশুর বুক ধরফর করে, খাবার রুচি থাকেনা এবং শিশুর বৃদ্ধি ও নিয়মিত হয়না। বিভিন্ন ধরণের ভিএসডি আছে, খুব জটিল প্রকৃতির না হলে এটাও ২ বছরের মধ্যে নিজে নিজেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অধিকাংশ ভিএসডি ই অপারেশনের দ্বারা অথবা ক্যাথেটার করে ডিভাইস ক্লোজার করে বন্ধ করতে হয়। এ,এস,ডির মত এই রোগটিও অনেক সময় পরিণত বয়স বা বার্ধক্যে এসে ধরা পড়ে। ইকোকার্ডিওগ্রাম ভিএসডি নির্ণয়ের বেশ দিক নির্দেশনাময় একটি পরীক্ষা।

টফ (টেট্রালজি অব ফেলট)
এটি বেশ জটিল একটি জন্মগত রোগ। হার্ট এর আভ্যন্তরীন চারটি ত্রুটির সমন্বয়ে এই রোগটি হয়। জন্মের সপ্তা দুয়েক পর থেকেই শিশুর শ্বাস কষ্ট দেখা দেয় এবং খাবার সময় অথবা কান্না করলে শিশুটি নীল হয়ে যেতে থাকে। ক্রমান্বয়ে এই লক্ষন গুলো বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং শিশুর শারীরিক বৃদ্ধিও ব্যাপক ব্যহত হয়। মাঝে মাঝে হঠাৎ করেই সে নীল হয়ে যায়, তবে এই মুহুর্ত গুলোয় মলত্যাগের ভঙ্গিমায় বসে থাকলে রোগীর আরাম হয়। ইকোকার্ডিওগ্রাম করে এই রোগ নির্ণয় করা যায়, তবে কার্ডিয়াক ক্যাথেটার করাও বেশ জরুরী। অপারেশনই এই রোগের একমাত্র চিকিৎসা। অপারেশন না করালে অধিকাংশ শিশু শৈশবেই জীবন হারাতে পারে।

পি,ডি,এ
পুরো নাম প্যাটেন্ট ডাক্টাস আর্টারিওসাস। ফুসফুসের ধমণীর সাথে মহাধমণীর (এওরটা) অস্বাভাবিক সংযোগই পিডিএ। সাধারণত পূর্ণ পরিণত হবার আগেই যেসব শিশু জন্ম গ্রহণ করে তদের এই রোগ বেশি হয়। অভিজ্ঞ চিকিৎসক রোগীকে পরীক্ষা করেই রোগ নির্ণয় করতে পারেন। ইকোকার্ডিওগ্রাম দ্বারা এই রোগ সহজেই নির্ণয় করা যায়। এটির আকার ছোটো হলে ক্যাথেটার দ্বারা ডিভাইস ক্লোজার, বড় হলে সার্জারি করা লাগে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত