সার্বিয়ার প্রথম নারী হাফেজ আলমা যায়নুল্লাহ

প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬, ১৪:০৩

জাগরণীয়া ডেস্ক

সার্বিয়া মধ্য ও দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের একটি স্থলবেষ্টিত দেশ। রাজধানীর নাম বেলগ্রেড। সার্বিয়ায় প্রায় ৫ লাখ মুসলমানের বাস। মুসলিমরা সেখানে তৃতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়। মুসলমানদের বেশিরভাগই বসনিয় এবং আলবেনীয় বংশোদ্ভূত।

সার্বিয়ার প্রচলিত আইনে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপন, পরিচালনা ও সেগুলোতে সাহায্য দেওয়ার অনুমোদন রয়েছে। সরকারের আইন মেনে সার্বিয়ার মুসলমানদের সংগঠন ইসলামিক শেখদম অব সার্বিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশটির গ্রান্ডমুফতি শেখ মুয়াম্মার এই সংগঠনের সভাপতি।  

শেখদমের পরিচালনায় রাজধানী বেলগ্রেড ও অন্য কয়েকটি শহরে সাতটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। এগুলো প্রতিটিতে ১ হাজার করে শিক্ষার্থী লেখাপাড়া করে। এ ছাড়া ৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব নভি পাজর নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংখ্যা ৪ হাজারের মতো। 

২০১৪ সালে সার্বিয়ার সেনাবাহিনী বেলগ্রেডের প্রধান কার্যালয়ে মুসলিম সৈন্যদের জন্য একটি মসজিদ উদ্বোধন করেছে। এর আগে নভি পাজার শহরে সার্বিয়ান মুসলিম সৈন্যদের জন্য একটি মসজিদ খুলে দেওয়া হয়েছিল। যা যুদ্ধের সময় বন্ধ করা হয়েছিল। 

সম্প্রতি দেশটি মুসলিম পর্যটকদের জন্য জনপ্রিয় ১০টি ভ্রমণ স্থানের অন্যতম স্থানে পরিণত হয়েছে। 

সেই সার্বিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রোশাভা শহরের ১৮ বছরের মেয়ে আলমা যায়নুল্লাহ পবিত্র কোরআনের হাফেজ হয়ে রেকর্ড গড়েছেন। কারণ, আলমা ওই শহরের প্রথম নারী, যে কোরআনে কারিমের হাফেজ হয়েছে। 

আলবেনীয় বংশোদ্ভূত আলমা সার্বিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রোশাভা শহরে বসবাস করেন। 

লমা যায়নুল্লাহ কোরআন মুখস্থ করা প্রসঙ্গে বলেন, "প্রথম দিকে পবিত্র কোরআনের আয়াত হেফজ (মুখস্থ) করা আমার জন্য অনেক কঠিন ছিল। কারণ, তখন আমি আরবি বর্ণমালার সঙ্গে পরিচিত ছিলাম না। কিন্তু আমার শিক্ষক আমাকে দারুণভাবে সহযোগিতা করেন। তার সহযোগিতায় আমি কোরআন তেলাওয়াত শিখি এবং তখন থেকেই কোরআন হেফজ করা শুরু করি"।

মাধ্যমিক স্কুলে পড়াশোনার পাশাপাশি কোরআন মুখস্থ করেছেন আলমা যায়নুল্লাহ। বিষয়টি তার প্রাত্যহিক জীবনে বেশ প্রভাব সৃষ্টি করে। এ বিষয়ে আলমা যায়নুদ্দিন বলেন, "কোরআন হেফজ শুরু করার পর আমার লেখাপড়ারও অভাবনীয় উন্নতি হয়। বিষয়টি আমাকে অবাক করে। আমি দারুণ উৎসাহবোধ করতে থাকি। অথচ আমি জীবনের উন্নতির ক্ষেত্রে কোরআনের প্রভাব সম্পর্কে পূর্বে অনবহিত ছিলাম। আমার মতে, কোরআন তেলাওয়াতের চেয়ে অন্য কোনো উত্তম অনুভূতি অামার নেই"।
 
নারীরা কঠিন ও ভারী কাজ করতে অক্ষম। এমন গুঞ্জন বা কথাকে আলমা পাত্তা দিতে রাজি নন। আ
লমার মতে, নারীরা তাদের দৃঢ় পরিকল্পনা ও ইচ্ছার মাধ্যমে সমাজে অনুসরণীয় অনেক কাজ করতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত