রাণীনগরে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০১৭, ২৩:২৫

জাগরণীয়া ডেস্ক

নওগাঁয় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। ছোট যমুনা নদীর পানি বিদপসীমার ৬০ সেন্টিমিটার ও আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার ২০৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নওগাঁ শহরের রাস্তা-ঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ডিসি ও এসপি’র বাসায় ৩ ফিট পানি উঠেছে। উজান থেকে নেমে আসা ঢল এবং তিন দিন ধরে অবিরাম টানা বৃষ্টিতে সোমবার রাতে রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ঘোষগ্রাম নামকস্থানে নওগাঁ-আত্রাই সড়কের ৩টি, নান্দাইবাড়ী নামকস্থানে ১টি স্থানে সড়ক ভেঙ্গে গেছে। 

এছাড়াও এ ইউনিয়নের ছোট যমুনা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ নান্দাইবাড়ী ভেড়ীবাঁধ ও বেতগাড়ী ভেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জেলা সদরের সাথে আত্রাই উপজেলার ও নাটোর জেলার সাথে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। বন্যার পানিতে নওগাঁর ৬টি উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক বিঘার ফসলি জমি তলিয়ে গেছে এবং কয়েক হাজার পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এতে প্রায় ২ লক্ষাধিক লোক পানিবন্দি হয়ে গেছে।

জেলার ছয়টি নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপদসীমার এখনও ৬০ সেন্টেমিটার উপর দিয়ে বইছে। আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় মান্দায় নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ৩০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আতঙ্কে রয়েছেন বন্যা কবলিত এলাকার লাখ লাখ মানুষ। বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে ঘরবাড়ি ও ফসল ডুবে যাওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের অবহেলাকেই দায়ি করছেন স্থানীয় ও ভুক্তভোগীরা।

বর্তমানে অসহায় পরিবারগুলো বিশ্ববাঁধে, স্কুলে ও উচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। এখনও পর্যন্ত বানভাসি মানুষের কাছে কোন সরকারি সাহায্য বা ত্রাণ পৌঁছেনি। যারফলে বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষেরা মানবেতন জীবনযাপন করছেন। 

গোনা ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসনাত খান জানান, শত শত জনতাকে নিয়ে আপ্রাণ চেষ্টা করেও ২টি ভেড়ীবাঁধ ও নওগাঁ-আত্রাই সড়কের ৪টি স্থানের ভাঙ্গন প্রতিরোধ করতে পারেননি। বন্যার পানিতে শত শত জমির ফসল, ঘর-বাড়ি তলিয়ে গেছে। নদীর পানি বৃদ্ধিতে নওগাঁ-আত্রাই সড়কে আরো ৫/৬টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। যে কোন মুহূর্তে  ভেঙ্গে যেতে পারে। এখনো ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছেনি।

পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। শহরের প্রধান সড়ক এক ফুট পানির নীচে এর মধ্য দিয়েও যানবাহন চলছে। এ ছাড়াও পুরাতন কালেকটরেট ভবন চত্বর। জেলা প্রশাসকের বাস ভাবন, পুলিশ সুপারের বাসভবন, জেলা পরিষদের ডাকবাংলো, মুক্তির মোড়, কাজীর মোড়, বিহারী কলোনী, নাপিত পাড়া, উকিল পাড়া, কালীতলা, পার-নওগাঁ ইত্যাদি স্থানে ১ থেকে দেড় ফুট পানির নীচে তলিয়ে গেছে। পানি এখনও বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জেলা প্রশাসক ড. আমিনুর রহমান বলেন, বন্যা দুর্গতদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। ইতোমধ্যে সোমবার বন্যা দুর্গত মানুষের মাঝে ৫০ হাজার টাকার শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। তালিকা প্রনয়নের কাজ শেষ হলেই সবার মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত