তিস্তার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত

প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০১৭, ০২:২১

জাগরণীয়া ডেস্ক

গত ৪ দিন ধরে অবিরাম বর্ষণ ও তিস্তার উজানে ভারতের গজলডোবা বাধের সব গেট খুলে দেয়ার কারণে তিস্তা ব্যারেজ এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। তিস্তা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় রংপুরের বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। জেলার গঙ্গাচড়া উপজেলার ৭ ইউনিয়নের ৩১ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। দুর্গত এলাকায় শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে এই এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে বন্যার ভয়াল রূপ।

বানভাসী লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩০ বছরেও তারা তিস্তার এমন ভয়াল রূপ দেখেনি। পানির তোড়ে গঙ্গাচড়া উপজেলার সদর লক্ষ্মিটারী, কোলকোন্দ, আলমবিদিতর, নোহালী গজঘণ্টা ও মর্নেয়া ইউনিয়নের ৩১টি গ্রাম হাঁটু থেকে বুক পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে পানিবন্দি হয়ে পড়ে হাজার হাজার মানুষ। ঘরের ভেতরে পানি প্রবেশ করায় মালামালও বের করতে পারেনি তারা। এরই মধ্যে উদ্ধার কাজে নেমে পড়েছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। স্পিড বোট নিয়ে দুর্গম চরাঞ্চল থেকে পানিবন্দি লোকজনকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তারা।

ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার পরিবার তিস্তা নদীর বাঁধসহ উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যা কবলিত এলাকায় শুকনো খাবার আর পানীয় জলের সংকট দেখা দিয়েছে।

প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা না গেলেও এক মাসের ব্যবধানে দুই দফা বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বন্যা কবলিত এলাকায় পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় এমপি ও পল্লী উন্নয়ন সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিয়ার রহমান রাঙ্গা। তিনি দুর্গতদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। তবে বানভাসী মানুষের অভিযোগ, এখনও কোনও ত্রাণ সামগ্রী তারা পাননি।

এ ছাড়াও পীরগাছা, কাউনিয়া, তারাগঞ্জ, পীরগঞ্জ উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যায় এসব এলাকায় শতকরা ৮০ ভাগ জমির ফসল তলিয়ে গেছে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক শ ম আশরাফ আলী জানান, বন্যায় এবার জেলার ৩০ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। তবে পানি সরে গেলে ফসলের কোনও ক্ষতি হবে না বলে দাবি করেন তিনি।

জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুজ্জামান জানান, বন্যা কবলিত মানুষদের জন্য ত্রাণ তৎপরতা শুরু করা হয়েছে। আরও ত্রাণ সরবরাহের জন্য মন্ত্রণালয়ে চাহিদা পত্র দেওয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত