অভিযোগের তীর নিয়ে মুখোমুখি রোকেয়া প্রাচী ও প্রসূন

প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০১৬, ১৬:১৭

জাগরণীয়া ডেস্ক

এবার অভিযোগের তীর নিয়ে মুখোমুখি অভিনেত্রী পরিচালক প্রযোজক রোকেয়া প্রাচী ও অভিনেত্রী প্রসূন আজাদ। 

সম্প্রতি একটি নাটকের শিডিউল ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে অভিনেত্রী প্রসূন আজাদের বিরুদ্ধে। অভিনেত্রী-নির্মাতা রোকেয়া প্রাচী তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ অভিযোগ তোলেন। 

তারপর প্রসূন তার ফেসবুকে এ বিষয়ে পাল্টা স্ট্যাটাস দিয়ে আক্রমণ করেন রোকেয়া প্রাচীকে। এরপর এই অভিযোগের জল গড়ায় ডিরেক্টরস গিল্ড, টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও অভিনয়শিল্পী সংঘ পর্যন্ত। প্রসূনের বিরুদ্ধে এসব সংগঠনে লিখিত অভিযোগ করেছেন রোকেয়া প্রাচী। 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রোকেয়া প্রাচীর বলেন, “গত ১৮ অক্টোবর ফরিদপুরে শুটিংয়ে যাওয়ার কথা ছিল। এ দিন বিকাল ৪টার সময় মালিবাগে গাড়ি পাঠাই প্রসূনকে আনার জন্য। এদিকে ক্যমেরাম্যানসহ অন্য কলাকুশলীরা ভিন্ন ভিন্ন জায়গাতে অবস্থান করছিল। কিন্তু প্রসূন আসে রাত ৮টায়। দেরির কারণ প্রসঙ্গে সে জানায়- শুটিং সেটে তার ভাইকে সঙ্গে নিয়ে আসায় দেরি হয়েছে। কিন্তু ছেলেটি তার আপন ভাই নন। তার অ্যাসিস্ট্যান্টও নন। এমনকি ছেলেটি ছোটও না। সে পরিণত একজন পুরুষ। তারপর প্রসূনকে বলি, ‘আমাদের অলরেডি অনেক দেরি হয়ে গেছে। আজকে পৌঁছাতে অনেক রাত হয়ে যাবে। ওকে রাতে কোথায় থাকতে দেব? এর চেয়ে বরং ও আগামীকাল আসুক আমি রুমের ব্যবস্থা করব।’ কিন্তু প্রসূন ওকে ছাড়া যেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলে, ‘আপনারা যান আমি ওকে নিয়ে আসছি।’ তখন বলি, তুমি যখন ওকে নিয়ে আসবে তখন আগে বললেই পরতে। আমরা চলে যেতাম।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘গেস্ট থাকবে তুমি আগে আমাকে জানাওনি। জানালে ব্যবস্থা করে রাখতাম। ছেলেটা তোমার অ্যাসিস্ট্যান্ট হলে ড্রাইভারের সঙ্গে রাখতে পারতাম। ছোট হলে আমাদের সঙ্গে রাখতাম। প্রসূন বলে, ‘আপনি এখনি এতটা পেইন দিচ্ছেন সেটে তো আরো বেশি দেবেন।’ তখন আমি বলি, ‘আমি প্রযোজক, পরিচালক। আমি তোমার ভালো-মন্দ দেখব না? তোমাকে পেইন দেব কেন!”

‘‘প্রসূন আজাদের জন্য আমার নাটকের শুটিং বাতিল করতে হলো। এ বিষয়ে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেই।  কারণ শুটিং বাতিল মানেই এতগুলো মানুষের রুটি-রুজিতে আঘাত করা। আর এ বিষয়ে প্রসূন ফেসবুকে লিখেছে : ‘আমাদের মিডিয়ার পরিচালক শিল্পীকে রাতেরবেলা আউট ডোরে একা নিয়ে যেতে চেয়েছে। যেখানে যাওয়াটা অনেক সময় সমস্যা হয়। সে (পরিচালক) তার কু ইচ্ছে চরিতার্থ করতে পারেনি বলে আমার ভাইকে সঙ্গে নিতে দেয়নি।’ আমি ২৭-২৮ বছর ধরে মিডিয়াতে কাজ করছি। অন্য অনেক মেয়েরাও কাজ করছে। আর মেয়ে পরিচালক ইন্ডাস্ট্রিতে হাতে গোনা চার পাঁচজন। বাকি সবাই পুরুষ। তার মানে সমস্ত পরিচালক কী চরিত্রহীন? প্রসূনের এ ধরনের কথা বলা যথেষ্ট আপত্তিকর। সে পরিচালক ও সম্পূর্ণ ইন্ডাস্ট্রিকে অসম্মান করেছে। আমার হয়তো ৫০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। ওকে ফাইন! তাতে সমস্যা নেই, কিন্তু পরিচালকদের এভাবে অসম্মান করে কথা বলতে সে পারে না। তাই আমি অভিযোগ জানিয়েছি। বাকিটা সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্তরা দেখবেন।’’ 

এ ব্যাপারে ডিরেক্টরস গিল্ড, টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও অভিনয়শিল্পী সংঘের কাছে প্রসূন আজাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করার পরপরই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওনারা ব্যবস্থা নিবেন বলেও রোকেয়া প্রাচীকে আশ্বস্ত করেছেন সংগঠনের প্রধানরা।    

এ প্রসঙ্গে প্রসূন আজাদ বলেন, “কোনো পরিচালক কিংবা পৃথিবীর কোনো মানুষ ইউনিটের হাজার মানুষের সামনে আমাকে অপমান করতে পারেন না। আমি অপরিচিত কাউকে নিয়ে গেলেও এটা করতে পারেন না। সেখানে আমি পরিচয় দিয়েছি, প্রত্যয় আহমেদ আমার ছোট ভাই। সে ইন্ডাস্ট্রিতে প্রতিষ্ঠিত ফটোগ্রাফার। আসলে সে আমার ছোট ভাইকে পছন্দ করেনি। সে চিৎকার করে আমার সঙ্গে কথা বলেছে। যা সে করতে পারে না। আমি নাবালিকা নই। আমার একটা পরিচয় আছে। আমার পরিবার আছে। আমার ঘরের চালের চিন্তা করতে হয় না। যদি চালের চিন্তা করতে হতো তবে হয়তো তার হাতে পায়ে ধরে বলতাম, ‘ম্যাডাম শুটিং করেন।’ আমি ওই পারসোনালিটির মেয়ে না। যে আমাকে সম্মান দেবে না আমি তার কাজ করব না। পুরো বিষয়টি রোকেয়া প্রাচীর পরিকল্পিত। উনি ইচ্ছে করেই এটা করেছেন। আমি এত নোংরা পলিটিক্সের মধ্যে যেতে চাই না। আমার পুরো জীবন এখনো পড়ে আছে। আর উনার বয়স তো প্রায় শেষ। আমি তার ফ্যান ছিলাম। সে সুবাদে কাজ করতে যাওয়া। কিন্তু যে আচরণ আমি পেয়েছি আমি খারাপ কিছু করিনি। আর কারো যদি খারাপ কিছু করে থাকি তবে আল্লাহ আছেন। তার বিচার তিনি করবেন। কিংবা মানুষ আমাকে সেভাবে দেখবে। আমি আসলে অভিনয়টা করি আর ওটাই ভালোবাসি। আসলে তিনি একটা নোংরা পলিটিক্সের মধ্যে আমাকে ফেলতে চাইছেন। এবং তারা ওটাই করেন। সুতরাং আমি এ বিষয় নিয়ে আর সময় নষ্ট করতে চাই না।’

আপনার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রসূন বলেন, ‘দেখা যাক। আমি অপেক্ষা করব। দেখি উনারা কী ব্যবস্থা নেন। দেখা হবে এই আর কি।’

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত