বাড়িতে বাবার লাশ রেখে পরীক্ষা দিলেন মেয়ে

প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০১৭, ২১:০১

জাগরণীয়া ডেস্ক

চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে সৈয়দা সানজিদা হামিম। প্রত্যেক পরীক্ষার দিন বাবা-ই তাকে মোটরবাইকে করে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যেতেন। কেন্দ্রের বাহিরে তিনঘণ্টা অপেক্ষা করে প্রতিবার মেয়েকে নিয়েই বাড়ি ফিরতেন মুক্তিযোদ্ধা বাবা এস.এম তৌহিদুল আলম। কিন্তু বাস্তবতা অনেক কঠিন, সেই প্রিয় বাবার লাশ ফেলে রেখে পরীক্ষা দিতে যেতে হবে তা কি কখনো ভেবেছিল সানজিদা? নিয়তি তাকে এই কঠিন বাস্তবতা মেনে নিতে বাধ্য করেছে।

১০ এপ্রিল (সোমবার) ছিল তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের পরীক্ষা। পরীক্ষা শুরুর পাঁচ ঘণ্টা আগে আকস্মিক হৃদক্রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন মুক্তিযোদ্ধা বাবা এস.এম তৌহিদুল আলম। তিন বোন আর বাবা-মাকে নিয়ে পরিবারটির একমাত্র পুরুষকর্তাকে হারিয়ে কতোটা শোকাগ্রস্ত তা লিখে বুঝানো কঠিন। এমনি মূহুর্তে বাবার লাশ ঘরে রেখেই মেয়েকে অংশ গ্রহন করতে হলো পরীক্ষায়। এমনি বেদনাদায়ক ঘটনা ঘটেছে ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট পৌরসভাধীন এ.বি.সি গ্রামে। ওই শিক্ষার্থীর বাবা তৌহিদুল আলম ছিলেন ফটিকছড়ি মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের ডেপুটি কমান্ডার। ছিলেন একজন দক্ষ সংগঠকও।

পরীক্ষার্থী সানজিদা ফটিকছড়ি বিশ্বদ্যিালয় কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। তার পরীক্ষা কেন্দ্রে উপজেলার নানুপুর লায়লা কবির ডিগ্রি কলেজ। তার রোল নং- ১১৮৯৩ ও রেজি.নং ১২১৪২৪৪০৯০।

ওই পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে কথা হয় কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত সচিব নানুপুর লায়লা কবির ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফোরকান  বলেন, আমরা পরীক্ষা শুরু হওয়ার পূর্ব থেকে বিষয়টি জেনেছি। পরীক্ষার্থীটির মনের অবস্থার কথা বিবেচনা করে যতটুকু সাহস ও শান্তনা দেওয়ার তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

এদিকে তিন ঘন্টার পরীক্ষার প্রায় আধঘণ্টা আগেই কেন্দ্র থেকে বরে হয়ে যান পরীক্ষার্থী সানজিদা তৌহিদ প্রকাশ হামিম।

এ সময় সানজিদা বলেন, পরীক্ষা দেওয়ার মতো মনের অবস্থা ছিল না। তারপরও সবাই বলাতে কেন্দ্রে এসেছি। যতটুকু সম্ভব লিখেই স্যারকে বলে কেন্দ্র থেকে বের হয়ে গেছি। জানিনা ফলাফল কি হবে। সবাই আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত