নবজাতকে কোলে নিয়েই এইচএসসি দিচ্ছেন দুই মা
প্রকাশ : ১১ এপ্রিল ২০১৭, ২০:১০


বর্তমান সময়ে চলছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। পরীক্ষাকেন্দ্রের একটি কক্ষের সামনের বেঞ্চে দুই ছাত্রী বসে পরীক্ষা দিচ্ছেন। একটু খেয়াল করতেই অসাধারণত্বটা চোখে পড়ে। দুজনের কোলেই শিশু। নবজাতক।
২ এপ্রিল (রবিবার) জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার সরিষাবাড়ী পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে এমনই দৃশ্য দেখতে পান স্থানীয় একটির পত্রিকার সাংবাদিক।
‘আমি পরীক্ষা দেব, এটাই ছিল আমার ইচ্ছা। তাই দুই দিনের নবজাতককে নিয়ে পরীক্ষা দিচ্ছি।’ বললেন পরীক্ষার্থী বেবী আক্তার (২০), তিনি এবারের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (বিএম) পরীক্ষার্থী। অদম্য তার ইচ্ছাশক্তি।
তার সঙ্গে কথা বলে ওই সাংবাদিক জানতে পারেন, ৩১ মার্চ (শুক্রবার) রাত আটটায় সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই মায়ের কোল আলো করে আসে এক কন্যাসন্তান। সন্তান জন্মের দুইদিন পর পরীক্ষা। বেবী আক্তার তবু চলে আসেন পরীক্ষা দিতে। সন্তানের নাম রেখেছেন খাদিজা। সরিষাবাড়ীর শিমলা বাজারের মো. জাকারিয়ার স্ত্রী বেবী। কর্মসূত্রে স্বামী এখন সৌদি আরবে আছেন। বেবী আক্তার অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। পরিবারের সবাই তাকে সহায়তা করেছেন।
২০১৫ সালে সাতপোয়া ইউনিয়নের ছাতারিয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদের মেয়ে বেবী আক্তারের সঙ্গে পৌর শহরের শিমলা বাজারের সোহরাব মণ্ডলের সৌদিপ্রবাসী ছেলে জাকারিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পরও বেবী আক্তার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চান। ২০১৫ সালে তিনি এসএসসি পাস করেন। এরপর ভর্তি হন স্থানীয় চর বাঙ্গালী টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি বিএম কোর্সে।
বেবীর কথাতো হলো। এবার আসি একই বেঞ্চের আরেক পরীক্ষার্থী মা লিপি খাতুনের (২১) কথায়। তিনি ২৬ দিনের নবজাত শিশুকে কোলে নিয়ে একই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন। সরিষাবাড়ীর মহাদান ইউনিয়নের সানাকৈর এসএস টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ থেকে লিপি খাতুন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এই মা শিশুর নাম রেখেছেন জানিক।
৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) কথা হয় পরীক্ষাকেন্দ্রের কক্ষ পরিদর্শক রাশেদা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, পরীক্ষা চলার সময় মাঝেমধ্যে পরীক্ষার্থী মায়ের কাছ থেকে আমি এই দুই শিশুকে কোলে নিই। নতুন মায়েদের যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সে ব্যাপারও দেখি।’
সরিষাবাড়ী পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ এবং পরীক্ষাকেন্দ্রের সচিব সৈয়দ আবদুর রউফ বলেন, আমার ৩৮ বছর শিক্ষকতা জীবনে এমন পরীক্ষার্থী মা কখনো দেখিনি। এ ধরনের পরীক্ষার্থী মায়েরা যেন হাসপাতালে বসে পরীক্ষা দিতে পারেন, সে বিষয়েও সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করব। পাশাপাশি এ রকম আত্মপ্রত্যয়ী মায়েরা যেন শিক্ষাজীবন শেষে কর্মসংস্থানের নিশ্চিত সুযোগ পান।
৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) পরীক্ষার চালাকালীন বেবী ও লিপিকে দেখতে যান উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা আমাতুস জোহরা। তিনি বলেন, নারীরা এখন যে কত আত্মনির্ভরশীল হয়েছে, তার একটা দৃষ্টান্ত এই দুই পরীক্ষার্থী মা। নিজেদের মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে নারীরা আর পিছিয়ে থাকবে না।
- নারী কোটা বনাম নারী আসন
- মানুষের দুঃখ আমি দেখিয়াছি (এক)
- স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
- ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে শ্বাসরোধে হত্যা, আসামির মৃত্যুদণ্ড
- আপোস শর্তে মডেল কাজী আসিফের জামিন
- খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন
- অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী
- টি-টোয়েন্টিতে সালমা, ওয়ানডের জন্য রুমানা
- আবারো শালবনে স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ
- আসিফা ধর্ষণের প্রতিবাদে অটোরিকশাচালকদের বিক্ষোভ
- শিশু ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ড ভারতে
- ৯ দিন ধরে নিখোঁজ সঙ্গীত শিক্ষক মনিকা
- বনমালী তুমি পরজনমে হইও রাধা
- বাড়ি পৌঁছে দেয়ার কথা বলে তরুণীকে গণধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২
- হালদা’র মাছ বাঁচবে তো?
- সামির বিরুদ্ধে এবার অর্থপাচারের অভিযোগ হাসিনের
- প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগের পরবর্তী পরীক্ষা ৪ মে
- প্রতিবাদের রাজনীতি
- ‘বের করে দেওয়া’ ছাত্রীরা হলে ফিরেছেন: প্রভোস্ট
- রোহিঙ্গা নির্যাতনের স্বাধীন তদন্ত চায় কমনওয়েলথ