‘অপ্রতিরোধ্যভাবে বাড়ছে নারী নির্যাতন’

প্রকাশ : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৬, ০৪:০৬

জাগরণীয়া ডেস্ক

নির্যাতনের ঘটনা বাড়তে থাকায় সমাজে ‘ন্যায়বিচার’ ধারণার প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা বেড়ে চলেছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল।

বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টসের (ইউল্যাব) চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে মোট এক হাজার ৩২৫ জন শিক্ষার্থী এ সমাবর্তনে সনদ পেয়েছেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান। 

ইউল্যাব বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সহ সভাপতি ড. কাজী আনিস আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমানও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

সুলতানা কামাল বলেন, আজকের বাংলাদেশ উন্নয়ন সূচকের অনেক ক্ষেত্রে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তারপরও দেশে কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে চলেছে।

একটি মানবাধিকার সংস্থার জরিপের তথ্য উল্লেখ করে সুলতানা বলেন, এ বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত দেশে ৮৯টি রাজনৈতিক সংঘাতের ঘটনায় ১৭৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৬৭১ জন নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, যাদের মধ্যে ৩২ জনের অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যু ঘটেছে। ৫৯জন কোনভাবে নিজেকে রক্ষা করতে পেরেছেন। ৪২২টি শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।

তিনি বলেন, অপ্রতিরোধ্যভাবে এসব ঘটনা বেড়ে চলেছে। যা মানুষের মনে এ হতাশাব্যঞ্জক অনুভূতি গেঁথে দিচ্ছে যে, এদেশে অপরাধীর কোনো বিচার হয় না। ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে সমাজে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াবে এবং অপরাধের শিকার যারা হবে, তারাই ভয়ে, সংকোচে মুখ লুকিয়ে বেড়াবে। সংঘাত, আক্রমন দখলদারিত্ব যেন জীবনের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং সেটা মেনে নেওয়াও বেঁচে থাকার সর্বোত্তম কৌশল হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।

সুলতানা কামাল আরও বলেন, ন্যায়বিচারের ধারণার প্রতি মানুষের আস্থাহীনতার ফলে অসহায়, প্রান্তিক ও সংখ্যালঘু মানুষ নিজেদের আরো অরক্ষিত ভাবতে শুরু করেছে। পক্ষান্তরে ক্ষমতাধর, দখলবাজ, আগ্রাসী দুর্বৃত্ত পরায়ন ব্যক্তিরা হয়ে উঠেছে চূড়ান্ত মৌলবাদী। তাইতো দুর্ভাগ্যজনক ভাবে মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীনতা লাভ করা বাংলাদেশে প্রচণ্ড সহিংস ঘটনা ঘটতে থাকে একের পর এক।

বিচারহীনতার সংস্কৃতি এদেশের মানুষের মন ও মননকে গ্রাস করতে থাকে। সুশাসনের চেহারা এখানে নিতান্তই অপরিচিত। এতে সবচেয় বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় দরিদ্র সমাজ।

মনুষত্বের বিকাশে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষার পরিক্রমায় মানবিকতাবোধ ও বিজ্ঞানমনস্কতা মানুষকে সঠিক শিক্ষিত করে তোলে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত