মেয়েদের পিরিয়ড বিষয়ে ‘ছেলেদেরও জানতে হবে’

প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০১৭, ১২:৩৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

যুক্তরাজ্যের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠান বলছে, স্কুলের ছেলে ও মেয়েদেরকে ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড সম্পর্কে এক সাথে শিক্ষা দান করা উচিত।

‘প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ইউকে’ নামের এই সংস্থাটি বলছে, এ নিয়ে কথা না বলাটাই ক্ষতিকর, তাই শ্রেণীকক্ষে এ বিষয়ে আলোচনা হওয়া দরকার।

এই প্রতিষ্ঠানটি ১৪ থেকে ২১ বছর বয়েসের মেয়েদের ওপর একটি জরিপ চালিয়ে দেখেছে, অর্ধেক মেয়েই এ বিষয়ে কথা বলতে লজ্জা বোধ করে।

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল ইউকের কর্মকর্তা কেরি স্মিথ বলছেন, আমার মনে হয় পিরিয়ডকে একটা নিষিদ্ধ বিষয় হিসেবে দেখা হয়, ছেলে এবং মেয়েদেরও এ নিয়ে যথেষ্ট বলা হয় না।

জরিপে অংশ নেয়া মেয়েদের প্রতি সাতজনের একজন বলেন, তাদের যখন প্রথম পিরিয়ড শুরু হয় তখন তারা জানতেন না যে এটা কি হচ্ছে।

এদের একজন নিনা, যার ১২ বছর বয়েসে পিরিয়ড শুরু হয়। নিনা বলেন, ‘আমি নিচে তাকিয়ে দেখলাম রক্ত। দেখে আমার তো প্রায় পাগল হবার দশা। তখন আমার মা আমাকে একটা স্যানিটারি টাওয়েল দিলেন, কিন্তু বিশেষ কিছু বললেন না। আমি ভাবছিলাম, যদি এর ফলে আমি মারা যাই তাহলে কি হবে।’

ইনেস (১৮) বলেন, এ নিয়ে তার ছেলে বন্ধুদের সাথে কথা বলতেও তাকে গলদঘর্ম হতে হয়েছে। আমি একটা স্যানিটারি টাওয়েল কিনতে গেলাম, কিন্তু ছেলেরা এটা বুঝে ফেললো , তারা বলতে লাগলো, আমরা বাতাসে লোহার গন্ধ পাচ্ছি। আমার মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছিল।

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ক্লেয়ার বলছেন, তিনি তার ভাইয়ের সাথেও এ নিয়ে কথা বলেন। ছেলেদের সাথে এ নিয়ে কথা বললে তারা কি মরে যাবে? বরং এ নিয়ে আর মাথা ঘামাবে না।

জরিপে আভাস পাওয়া যায় যে মাত্র ২৪ শতাংশ মেয়ে তাদের পুরুষ বন্ধুদের সাথে এ বিষয়ে নি:সংকোচে কথা বলতে পারে।

জরিপে অংশ নেয়া ছেলেদের মধ্যে একজন হচ্ছেন নিদার (১৯)। তিনি বলেন,  পিরিয়ড একটা প্রাকৃতিক ব্যাপার, এটা কোন দোষ নয়। কিন্তু এটা নিয়ে কথা বলারও কিছু নেই। আমার যদি জ্বর হয়, তাহলে আমি তো আপনাকে বলতে যাবো না যে আমার জ্বর হয়েছে?

প্ল্যান-এর কেরি স্মিথ বলেন, আমরা মনে করি ছেলে ও মেয়েদের এ ব্যাপারে মাধ্যমিক স্কুলে একসাথে পড়ানো উচিত। ছেলেরা আমাদের বলেছে যে ঋতুস্রাব সম্পর্কে কিছুই না জানাটা ঠিক নয়।

ইংল্যান্ডের শিক্ষা বিভাগের একজন মুখপাত্র এ ব্যাপারে বলেছেন, স্কুলগুলো ইতিমধ্যেই যৌন শিক্ষা কর্মসূচির আওতায় এ বিষেয় শিক্ষাদান করতে পারছে। এটা জাতীয় বিজ্ঞান পাঠ্যসূচির মধ্যেও আছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত