অর্থনীতিতে নারী

ভারত পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ, তবে যথেষ্ট নয়

প্রকাশ : ০৯ মে ২০১৮, ১৬:১৪

জাগরণীয়া ডেস্ক

আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ম্যাককিনসে গ্লোবাল ইনস্টিটিউট প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি দেশে অর্থনীতিতে নারীর অবদানকে তুলে ধরা হয়েছে। দ্য ইকোনমিস্টের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ম্যাককিনসের এই প্রতিবেদনের কথা। তাতে দেখা গেছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতির দেশ চীনে জিডিপির ৪১ শতাংশে অবদান রাখেন নারী, যা কিনা যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও বেশি। এদিকে ১৯ শতাংশ নারীর অবদান নিয়ে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।

ম্যাককিনসের প্রতিবেদনে বলা হয়, তালিকার শীর্ষে থাকা চীন ২০৩২ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়িয়ে শীর্ষ অর্থনীতিতে পরিণত হতে পারে। 

তবে শুধুমাত্র চীন নয়, এশিয়ার অন্যান্য দেশেও অর্থনীতিতে নারীর ভূমিকার অগ্রগতি হয়েছে। যেমন গত ১০ বছরে জাপানে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। ফিলিপাইনে পেশাগত বা কারিগরি কাজের ক্ষেত্রে নারীর সংখ্যা এখন পুরুষের চেয়ে বেশি। ভারতে শ্রম খাতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে।

তালিকায় দেখা যায়, চীনের পরেই যথাক্রমে আছে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া। এদের প্রত্যেকের জিডিপিতে নারীর অবদান ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ। ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ নারীর অবদান রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইনস, জাপান, ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিতে। 

তালিকায় একদম নিচের দিকে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান। জিডিপিতে নারীর অবদান বাংলাদেশে ১৯ শতাংশ, ভারতে ১৮ শতাংশ ও পাকিস্তানে ১০ শতাংশ।

তবে ম্যাককিনসে বলছে, নারীর অনেক কাজই আসলে জিডিপিতে লিপিবদ্ধ হচ্ছে না। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) এর পরিসংখ্যান তুলে ধরে ম্যাককিনসে জানায়, চীনে নারীরা যেসব কাজ করে, তার ৭৩ ভাগই বিনা পারিশ্রমিকের কাজ। দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও চীনে এই হার যথাক্রমে ৮৩, ৮৪ ও ৮৫ শতাংশ। গৃহস্থালির কাজে কঠোর পরিশ্রম, সন্তানের জন্মদান ও লালনপালন ইত্যাদি ক্ষেত্রে নারীরা দিনের পর দিন ধরে যে হাড়ভাঙা খাটুনি দেন, তার সবই বিনা পারিশ্রমিকের কাজ। তাই জিডিপির পরিমাপ নির্ধারণের হিসাব-তালিকায় এসব কাজ বাইরে রাখা হয়।

ম্যাককিনসে মনে করে, দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশে পারিবারিক আয় ভালো হলে সেখানে নারীর অর্থনৈতিক কাজে অংশগ্রহণকে নিরুৎসাহিত করা হয়, যা অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণের অন্তরায়। এই ধরণের সামাজিক বাধাসমূহ পেরোতে পারলে এই অংশগ্রহণ আরও বাড়ানো সম্ভব।

উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালের হিসাব অনুযায়ী সারা বিশ্বে জিডিপিতে নারীর অবদান ৩৭ শতাংশ। যার মধ্যে চীনে ৪১ শতাংশ, পূর্ব ইউরোপ ও সেন্ট্রাল এশিয়ায় ৪১ শতাংশ। অন্যদিকে, দক্ষিণ এশিয়ায় এই হার ২৪ শতাংশ। 

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশে পুরুষদের তুলনায় নারীদের কর্মসংস্থান বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। এ সময়ে দেশে ১৪ লাখ লোকের কর্মসংস্থান বেড়েছে এবং তার মধ্যে ৯ লাখই নারী।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত