ব্যাংক সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নিয়ে আসার তাগিদ প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশ : ১৪ এপ্রিল ২০১৮, ১২:৪৩

জাগরণীয়া ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের প্রতি সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছেন। গণভবনে ১৩ এপ্রিল (শুক্রবার) বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)র কাছ থেকে অনুদান গ্রহণকালে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি আপনাদেরকে সুদের হার কমানোর কথা বলতে চাই, না হলে দেশে বিনিয়োগ সম্ভব নয়... এটিকে অবশ্যই সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনলে আপনারা লাভবান হবেন, এতে জনগণ ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কাজ করতে অধিক আগ্রহী হবে।’

প্রধানমন্ত্রী সুদের হার কমিয়ে ব্যাংক কর্তৃপক্ষগুলোকে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা আপনাদের উত্তাপিত সকল সমস্যার সমাধান করেছি, এখন আপনাদেরকে অঙ্গীকার পূরণ করতে হবে।’

বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। বিএবি’র অধীন ব্যাংকগুলো প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলে ১৬৩ কোটি টাকা দান করেছে।

ব্যাংক সম্পর্কে মিডিয়ার সমালোচনার বিষয়ে বিএবি’র চেয়ারম্যানের মন্তব্যের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু লোক আছে, তারা লিখবে, এটা তাদের কাজ। এতে মনক্ষুণ্ণ হওয়ার কিছু নেই। আপনারা আপনাদের কাজ যথাযথভাবে করে যাবেন, যাতে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সাধিত হয়।

তিনি বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অজর্নের উল্লেখ করে বাংলাদেশ অদুর ভবিষ্যতে এ দেশের উন্নত দেশ হবার ব্যাপারে দৃঢ় আশা ব্যক্ত করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং বিনিয়োগ অজর্নের মতো আরো অনেক সুযোগ সুবিধা সৃষ্টি করতে হবে। আমরা এখন ভিক্ষা করতে এবং অন্যদের শর্ত মেনে নিতে পারব না। একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে এই অর্জন আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজন। এখন আমাদেরকে এই সাফল্য অজর্ন করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী এলডিসি গ্রুপ থেকে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে বাংলাদেশের মর্যাদা অজর্নের জন্য তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সুচক অজর্ন সম্পর্কে বলেন, আগামী ছয় বছর এই সাফল্য ধরে রাখা কোন কঠিন কাজ নয়।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ যখন স্বল্পোন্নত দেশ ছিল, তখন অনেক লোক এ দেশটিকে অবহেলার চোখে দেখেছে। তবে এখন আমরা এ অবস্থা কাটিয়ে ওঠে একটি মর্যাদাশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। আমাদেরকে এই মর্যাদা বজায় রাখতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকেও ভূমিকা রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার বিদ্যুৎ, জ্বালানি, ব্যাংক, বীমা, টেলিযোগাযোগ ও টেলিভিশনসহ সকল সেক্টর বেসরকারি খাতের সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছে। এতে দেশে বিপুল সংখ্যক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, গ্রামের লোকও এখন ব্যাংকিং সুযোগ-সুবিধা লুফে নিচ্ছে। তারা মাত্র ১০ টাকা দিয়ে ব্যাংক হিসাব খুলছে।

তিনি তাঁর ত্রাণ তহবিলে আর্থিক অনুদান দেয়ায় ব্যাংক মালিক, চেয়ারম্যান, ব্যাস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, তাদের এই অনুদান সমাজের অসহায়, দুস্থ, অসুস্থ ও অন্যান্য অসহায় লোকদের অর্থনৈতিক সমস্যা নিরসনে সহায়ক হবে।

বিএবি’র চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, এখন ফার্মাস ব্যাংকে আর কোন সমস্যা নেই। ব্যাংকটি এখন আগের অবস্থানে ফিরে গেছে। ব্যাংকে নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ব্যাংকটি ইতোমধ্যেই ২৫৭ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায় করেছে।

প্রধানমন্ত্রী এর আগে ২১ আগষ্টে গ্রেনেড হামলায় আহত এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য আর্থিক সহায়তা গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী অনুদানের চেক গ্রহণ করে তাদেরকে ধন্যবাদ জানান।

সূত্র: বাসস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত