আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করবে বাংলাদেশ ব্যাংক

প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৬:৩২

জাগরণীয়া ডেস্ক

বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ভূমিকার জন্য ফিলিপাইনের রিজল কমার্সিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে ফৌজদারি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

৭ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মামলা করার সিদ্ধান্তের কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফিলিপাইনের সরকার মামলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনী সহায়তা করবে।’

পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান।

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আইনজীবী আজমালুলহোসেন কিউসির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল সম্প্রতি ফিলিপাইন সফর করে এসেছেন। যে প্রতিবেদন তারা দিয়েছেন, তার ভিত্তিতেই মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে নিউইয়র্কে এই মামলা করা হবে। মামলার বাদী হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ও সুইফট কর্তৃপক্ষও থাকবে।

রাজী হাসান বলেন, ‘ফিলিপাইনে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে ৬ কোটি ৭০ লাখ বেরিয়ে কোথায় গেছে তার ধারণা পাওয়া গেলেও প্রায় দেড় কোটি ডলারের বিষয়ে কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। আরসিবিসির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা এর সঙ্গে জড়িত এবং ব্যাংকেরও দায় রয়েছে। এ কারণেই আমরা আরসিবিসির কাছ থেকে অর্থ ফেরত আনতে ফৌজদারি মামলা করতে যাচ্ছি।’

অবশ্য মামলা করার আগে আরসিবিসি কোনো প্রস্তাব নিয়ে এলে বাংলাদেশ তা ভেবে দেখবে বলে জানান তিনি।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সুইফট ম্যাসেজিং সিস্টেমের মাধ্যমে ৩৫টি ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশের এক বিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফেলার চেষ্টা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি ম্যাসেজে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার যায় ফিলিপাইনের আরসিবিসিতে। আর আরেক আদেশে শ্রীলংকায় পাঠানো হয় ২০ লাখ ডলার।

শ্রীলংকায় পাঠানো অর্থ ওই অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া শেষ পর্যন্ত আটকানো গেলেও ফিলিপাইনের ব্যাংকে যাওয়া অর্থের বেশির ভাগটাই স্থানীয় মুদ্রার বদলে জুয়ার টেবিল ঘুরে চলে যায় নাগালের বাইরে।

রিজল ব্যাংকের একটি শাখা হয়ে বেরিয়ে যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে এক ক্যাসিনো মালিকের ফেরত দেওয়া দেড় কোটি ডলার বাংলাদেশকে বুঝিয়ে দিয়েছে ফিলিপাইন। এ ঘটনায় রিজল ব্যাংককে ২০ কোটি ডলার জরিমানাও করেছে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রিজার্ভ চুরির ঘটনার পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ঢাকায় মামলা করা হয়।

বর্তমানে গৃহীত কার্যক্রম যথাযথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে অতি শিগগিরই রিজার্ভ হতে চুরি হওয়া অর্থ ফেরত আনা সম্ভব হবে বলে রাজী হাসান প্রকাশ করেন।

সূত্র: বাসস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত