স্থলবন্দরের আয় বেড়েছে ২০ শতাংশ

প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০১৭, ১৬:৩৫

জাগরণীয়া ডেস্ক

আমদানি-রফতানি কার্যক্রমের মাধ্যমে বিদায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশের স্থলবন্দরগুলো ১০০ কোটি টাকা আয় করেছে। এর আগের ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আয়ের পরিমাণ ছিল ৮৩ কোটি টাকা। সেই হিসেবে এক বছরে স্থলবন্দরগুলোর আয় বেড়েছে ২০ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বিগত অর্থবছরে স্থলবন্দর থেকে যত আয় হয়েছে, এর প্রায় ৮৮ শতাংশের বেশি এসেছে তিনটি স্থলবন্দর থেকে। স্থলবন্দরগুলো হলো বেনাপোল, বুড়িমারী ও ভোমরা। বরাবরের মতো গত অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি মাশুল আদায় হয়েছে বেনাপোল স্থলবন্দরে। এই স্থলবন্দরের আয় ৪৪ কোটি টাকা। যা মোট আয়ের অর্ধেকের কাছাকাছি।বুড়িমারী সাড়ে ২৭ কোটি টাকা ও ভোমরা ১৭ কোটি টাকা আয় করেছে।

দেশের একমাত্র রফতানি নির্ভর স্থলবন্দর আখাউড়া ৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা আয় করেছে। টেকনাফ, সোনামসজিদ, হিলি, বিবিরবাজার, বাংলাবান্ধা ও নাকুগাঁও এই ছয়টি স্থলবন্দরের আয় সব মিলিয়ে সাড়ে ১১ কোটি টাকা। 

বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, গত কয়েকবছরে স্থলবন্দরগুলোর অবকাঠামোগত উন্নয়ন হওয়ায় এর সক্ষমতা বেড়েছে। এতে কাঙ্খিত সেবা নিশ্চিত হওয়ায় দ্রুত পণ্য খালাস হচ্ছে। পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি ধারাবাহিকভাবে শক্তিশালী হওয়ায় ভারতের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যও বেড়েছে। মূলত এসব কারণে স্থলবন্দরগুলোর আয় বাড়ছে।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আরো দু’টি নতুন স্থলবন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ভোমরা ও বেনাপোল স্থলবন্দর সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এসব কাজ শেষ হলে স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি আরো বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরে স্থলবন্দর থেকে ১২০ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে বলে তপন চক্রবর্ত্তী জানান।

স্থলবন্দরের আয়ের প্রধান উৎসগুলো হলো খালাস হওয়ার অপেক্ষায় থাকা পণ্যের জন্য শেড ও ইয়ার্ড ভাড়া,ওজন মাপার মাশুল,প্রবেশ মাশুল, শ্রমিক মজুরি, দলিলাদি প্রক্রিয়াকরণ মাশুল ইত্যাদি।

দেশে বর্তমানে ২৩টি স্থলবন্দর আছে।তবে এর মধ্যে ১০টি স্থলবন্দর কার্যকর আছে।বাকিগুলো এখনো শুল্কস্টেশনের মতো চলে।স্থলবন্দর দিয়ে মূলত স্থলপথে আমদানি-রফতানি হয়। প্রায় শতভাগ পণ্যই আমদানি-রফতানি হয় ভারতের সঙ্গে।মিয়ানমারের সঙ্গে হয় ১ শতাংশেরও কম।

তপন চক্রবর্ত্তী বলেন,আগামী ১১ সেপ্টেম্বর সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দর পুরোপুরি চালু হবে।এর বাইরে চলতি বছর আরো দু’টি স্থলবন্দর চালু করার চেষ্টা করছি।এতে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের আয় আরো বেড়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তিনি জানান, গত অর্থবছরে স্থলবন্দরগুলো দিয়ে ১ কোটি টন পণ্য আমদানি-রফতানি হয়েছে।

উল্লেখ্য, বার্ষিক আয় দিয়েই স্থলবন্দরগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, উন্নয়নসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয় বহন করা হয়। প্রতিবছর গড়ে ৪০ থেকে ৫০ কোটি টাকা এসব খাতে ব্যয় হয়। বাকি অর্থ সরকারি কোষাগারের পাশাপাশি স্থায়ী আমানত হিসেবে রাখা হয়।আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে স্থায়ী আমানতের পরিমাণও বেড়েছে।গত জুলাই মাসে এসে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের স্থায়ী আমানত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২১৪ কোটি টাকা।গত অর্থবছরে আমানতের সুদ বাবদ পাওয়া গেছে ১০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। গত ২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষে স্থায়ী আমানতের পরিমাণ ছিল ১৬৮ কোটি টাকা।এক বছরের ব্যবধানে স্থায়ী আমানত বেড়েছে ৪৬ কোটি টাকা।

ভারতসহ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য সহজ করতে ২০০১ সালে স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়।

সূত্র: বাসস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত