লালবাগ কেল্লায় বাংলার বিলুপ্তপ্রায় নৌকার প্রদর্শনী

প্রকাশ : ১৯ এপ্রিল ২০১৭, ২১:০৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

বিশ্ব ঐতিহ্য দিবস উপলক্ষে ১৮ এপ্রিল (মঙ্গলবার) লালবাগ কেল্লায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে খননকাজ থেকে প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও আবহমান বাংলার নৌকার প্রদর্শনী হয়েছে। প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা এবং সংরক্ষণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে এ আয়োজন। এর উদ্যোক্তা ছিল প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর ও বেসরকারি সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। তিনি বলেন, নানাভাবে আমরা প্রত্নসম্পদ খুঁজে পাচ্ছি। কিন্তু সেগুলো সংরক্ষণ করার মতো আধুনিক প্রযুক্তি এখনও আমাদের পর্যাপ্ত নয়। এক্ষেত্রে কাজ করার রয়েছে আমাদের। একইসঙ্গে আমাদের প্রত্নসম্পদ বিশেষজ্ঞও তৈরি করতে হবে, যারা আরও গভীরভাবে গবেষণা করবে। ইতিহাসের অনেক অধ্যায় এখনও জানার আছে।

ঐতিহ্যবাহী নৌকা প্রদর্শনীতে বিলুপ্তপ্রায় নৌকাগুলোর মধ্যে ঠাঁই পেয়েছে কুতুবদিয়ার ‘চাঁদ’, ‘শুলুক’, ‘বালাম’, ‘টেডি বালাম’, ফরিদপুরের ‘বিক’, সিরাজগঞ্জের ‘হরোঙ্গা’ ও ‘বজরা’, পাবনার নগরবাড়ির ‘মালার’, চট্টগ্রামের ‘বড় শাম্পান’ ও ‘মাছধরা ট্রলার’, চাঁদপুরের ‘গাশী’, মানিকগঞ্জের ‘টাবোরি’, রাজশাহীর ‘গয়না’, খুলনার ‘পদি’সহ বিভিন্ন অঞ্চলের বিলুপ্তপ্রায় নৌকাগুলো।

অন্যদিকে পুরাকীর্তির মধ্যে ঠাঁই পেয়েছে বিভিন্ন সময়ে উদ্ধার করা কষ্টি পাথরের বিষ্ণু মূর্তি। ছিল বেশকিছু বুদ্ধ মূর্তিও। নরসিংদী উয়ারী-বটেশ্বর এলাকার প্রত্নস্থল থেকে উদ্ধার করা প্রাগৈতিহাসিক যুগের বিভিন্ন ধরণের পাথরের হাতিয়ার, ছাপাঙ্কিত রৌপ্য মুদ্রা, স্বল্প মূল্যবান পাথরের গুটিকা, কাঁচের গুটিকা, লোহার নির্দশন ও মৃত্পাত্রের টুকরা নিয়ে প্রদর্শনী ছিল আরেকটি গ্যালারিতে। ছিল নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলা থেকে প্রাপ্ত প্রত্নসম্পদ, পঞ্চম শতাব্দীতে ভরত ভায়না বৌদ্ধ মন্দিরের নানা পুরাকীর্তি। প্রদর্শনীতে আরও ছিল পোড়ামাটির কলসের গলা ও প্রদীপের ভগ্নাংশ, পাটার ভগ্নাংশ, ঝুমঝুমি, পোড়ামাটির ফুলদানি।

পরে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর ‘বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পরিচিতি’ শীর্ষক এক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। এই বইগুলো ফ্রেন্ডশিপ কর্তৃক পরিচালিত ৮৬টি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠ্যবই হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

এরপর মোঘল শাসন, পলাশী যুদ্ধের মতো ঐতিহাসিক ঘটনাবলির বর্ণনা করা হয়  শব্দ ও আলোর মাধ্যমে। পর্যায়ক্রমে উঠে আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথাও। সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের চিত্রনাট্যে এ লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শোয়ে ধারাবিবরণী দিয়েছেন আসাদুজ্জামান নূর ও শিমূল ইউসুফ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত