আজ চৈত্রসংক্রান্তি : নগরীজুড়ে বর্ষ বিদায়ের অনুষ্ঠান

প্রকাশ : ১৩ এপ্রিল ২০১৭, ১৬:০৬

জাগরণীয়া ডেস্ক

আজ বৃহস্পতিবার চৈত্রসংক্রান্তি। বাংলা ১৪২৩ সালের শেষ দিন।

কবির ভাষায়- ‘জীর্ণ পুরাতন যাক ভেসে যাক, মুছে যাক গ্লানি...’ বিদায়ী সূর্যের কাছে আজ এমনই প্রণতি জানাবে বাঙালি। আর সেই সঙ্গে মহাকালের অতলগর্ভে হারিয়ে যাবে আরও একটি বাংলা সন।

আজ সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদায়ী বছরের সমস্ত চাওয়া পাওয়া, হতাশা ও অপ্রাপ্তির সাঙ্গ হবে। তবে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী বাঙালি জাতি বিভিন্ন চাওয়া পাওয়ার সাথে বছরের শেষ দিনেও একটি দাবিতে থাকবে অনড়, আর তা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার প্রেরণা।

দিবসটি পালনে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

বিদায়ী বছর সম্পর্কে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, জাতীয় জীবনে ১৪২৩ সনে দেশের মানুষ বর্তমান সরকারের নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে ব্যাপক উন্নয়নের ছোঁয়া পেয়েছে। রাজনীতি, অর্থনীতি, সাংস্কৃতিক, কূটনেতিক, বৈদেশিক বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারি কাজের সফলতায় দেশের উন্নয়ন ঘটে চলেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এবং বিদেশী সংস্থাসমূহ এখন বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল বলে চিহ্নিত করে থাকে। আগামী বছরটাও এমনই সম্ভাবনাময় হয়ে থাকুক, তা-ই বাঙালি প্রত্যাশা করবে।

তিনি বলেন, বিদায়ী বছরে হলি আর্টিজানে বিদেশী হত্যার মতো বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি দুঃখজনক ঘটনাও ঘটেছে। তবে জঙ্গি নিধনে সরকারের সাফল্যও আবার দেশে-বিদেশে বেশ প্রশংসিত হয়েছে। মূলত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে মর্যাদার আসন অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

চৈত্রসংক্রান্তি প্রসঙ্গে বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক রশীদ হায়দার বলেন, বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা চৈত্রসংক্রান্তির উৎসবটি নানা পুজো অর্চণার মধ্যদিয়ে পালন করে থাকেন। সূর্যের কৃপা প্রার্থনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের কৃষককুল পুরো চৈত্রমাস জুড়েই পালন করেন প্রার্থনা উৎসবের। হিন্দু ব্যবসায়ীরা আয়োজন করেন চড়ক পুজোর।

তিনি বলেন, চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে লোকমেলার আয়োজন গ্রামগঞ্জেই বেশি হয়। মেলা, গান-বাজনা, যাত্রাপালাসহ নানা আয়োজনে উঠে আসে লোকজ সংস্কৃতির নানা সম্ভার। অনেক জায়গায় ইতোমধ্যে চৈত্রসংক্রান্তির মেলা বসে গেছে। সে দিক থেকে শহরাঞ্চলে চৈত্রসংক্রান্তির চিরন্তন আবেদন বলতে গেলে তেমন নেই, গান-বাজনার কিছু অনুষ্ঠান ছাড়া।

চৈত্রসংক্রান্তির অনুষ্ঠান
প্রতি বছরের মত এবারও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি বর্ষবরণেল পাশাপাশি বর্ষ বিদায়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এ উপলক্ষে বিকেল ৪টায় একাডেমির ভবনসমূহের ছাদে ঘুড়ি উৎসব ও একাডেমি প্রাঙ্গণে লাঠি খেলার আয়োজন রাখা হয়েছে। এছাড়া ৫টায় পুঁথি পাঠ, সোয়া ৫টায় পুতুলনাট্য, পৌনে ৬টায় পালা গান, সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় গম্ভীরা ও পৌনে ৭টায় রায়বেশে পরিবেশিত হবে।

সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে বর্ষবিদায়ের সূচনা সঙ্গীতের মধ্যদিয়ে শুরু হবে অনুষ্ঠান। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও বর্ষবিদায়ের শুভেচ্ছা বক্তৃতা দেবেন সাংস্কৃতিক অঙ্গণের বিশিষ্টজনেরা। বর্ষ বিদায়ের অনুষ্ঠানে শিল্পীরা পরিবেশন করবেন গান। আলোচনা ও গানের ফাঁকে ফাঁকে চলবে আবৃত্তি। এছাড়া বাঙালীর ঐতিহ্যবাহী শুকনো খাবার মুড়ি-মুরকীর আয়োজনও রেখেছে ফেডারেশান।

গেন্ডারিয়ার সীমান্ত খেলাঘর আসর ও সীমান্ত গ্রন্থাগার যৌথভাবে চৈত্র সংক্রান্তি ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। চৈত্রসংত্রান্তি উপলক্ষে ‘আঁকবো আমরা রাঙাবো গেন্ডারিয়া’ এ স্লোগানকে শিরোনাম করে গত দু’বছরের মতো এবারও বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় “আল্পনা উৎসব-১৪২৪” এর আয়োজন করেছে।

বর্ষবিদায় উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চৈত্রসংক্রান্তি উৎসবের আয়োজন করেছে সুরের ধারা। এ প্রসঙ্গে সুরের ধারার রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা জানান, চৈত্র মাসের শেষ বিকেলে সুরের ধারার আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে প্রতিবারের মতো ‘চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব ১৪২৩’ বিদায় এবং বর্ষবরণ ১৪২৪ উৎযাপনের মূল কার্যক্রম। এবারের চৈত্র সংক্রান্তির বিষয় ‘বাংলাদেশে রবীন্দ্র’। ঐদিন সন্ধ্যা সূর্যাস্ত থেকে রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত চলবে বর্ষবিদায়ের অনুষ্ঠান। পুরো অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করবে চ্যানেল আই।

সূত্র: বাসস

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত