'বাবা আমাকে স্যানিটারি প্যাড কিনে দিয়েছে'

প্রকাশ : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ০০:১১

জাগরণীয়া ডেস্ক

“আমার বাবা আমাকে স্যানিটারি প্যাড কিনে দিয়েছে। মা কাপড় দিয়েছিল। বাবা সায় দেয় নি। ফার্মেসি থেকে প্যাড কিনে এনেছিল। এই আমার প্রথম মাসিকের অভিজ্ঞতা”

নিজের প্রথম মাসিকের অভিজ্ঞতা লিখতে গিয়ে এভাবেই লিখেছিলেন দেউতি হাই স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্রী অংকন। 

গত ৪ ফেব্রুয়ারি রংপুরের পীরগাছা উপজেলার দেউতি হাই স্কুল এন্ড কলেজে অনুষ্ঠিত হয় Donate a Pad for hygiene Bangladesh এর আয়োজনে পিরিয়ডকালীন সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার। সেখানে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঁচশ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তাতে প্রধান অতিথি ছিলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার স্টাডিজ ডিপার্টমেন্টের ডীন হুমায়ুন কবীর। মূল আলোচক ছিলেন ডোনেট এ প্যাডের প্যানেল ডক্টর ড: মাহমুদা আক্তার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওই ইন্সটিটিউট এর ভাইস প্রিন্সিপাল জোবায়ের স্যার এবং শিক্ষক হান্নান স্যার। সেমিনারে সার্বিক সহযোগিতা করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জেন্ডার স্টাডিজের ছাত্রী নাহিদা নিশি এবং তার বন্ধুরা।

সেমিনারের আয়োজক, ডোনেট এ প্যাডের প্রতিষ্ঠাতা মারজিয়া প্রভা বলেন, "আমাদের অন্য সব সেমিনারের চাইতে আলাদা ছিল এই সেমিনার। অফলাইনে প্রথম ঋতুস্রাবের অভিজ্ঞতা লিখতে দেয়েছিলাম মেয়েদের। সঙ্গে কিছু কুইজ। ট্যাবু ভেঙে ৫০০ মেয়ে অংশগ্রহণ করেছিল এই কুইজ প্রতিযোগিতায়"।

প্রভা বলেন, "মাসিকের অভিজ্ঞতা তাদের লেখা অনলাইনে আমরা যারা নারীদের নিয়ে লিখেছি তাদেরও হার মানিয়েছে। সেই লেখার উপর ভিত্তি করে তিনজনকে পুরস্কার দিতে পেরেছি। টাকার অভাবে মাত্র তিনজনকে পারলাম। হয়ত আরও কিছু ভালো বই কিনতে পারলে আরও কিছু মেয়েকে পুরস্কার দিতে পারতাম"। 

প্রভা আরো বলেন, "আমরা যখন Donate a Pad for hygiene Bangladesh প্রজেক্টের কাজ শুরু করি, সারাদিনই গালিগালাজ এর উপরে থাকতাম। ঢাকা থেকে প্রতি মাসে আমাদের স্কুলগুলোতে প্যাড যায়। প্যাড সার্ভিসের জন্য প্যাড। সিএনজিওয়ালা হাসে, কুরিয়ারওয়ালা হাসে, বাসওয়ালা হাসে। টিপেটুপে দেখে কি দিচ্ছি বস্তা ভরে! আমার দিকেও তাকায় তারা। খুব বুঝি আমার শরীরে একচোট স্ক্যানিং করছে। এই এতসবের পরেও তো দমে যাই নি একদম"। 

প্রভার এই দমে না যাওয়ার ফলশ্রুতিতেই উত্তরবঙ্গে দেউতি হাই স্কুল এন্ড কলেজে এবার শুরু হল Donate a Pad for hygiene Bangladesh এর প্যাড সার্ভিস। আগামী ছয় মাস এখানে সফল হবার স্বপ্নই এখন প্রভার চোখে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত