ইলা মিত্রের পৈত্রিক বাড়ি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত

প্রকাশ | ২১ জানুয়ারি ২০১৭, ১৪:৫৮

অনলাইন ডেস্ক

বৃটিশ বিরোধী ও তে-ভাগা আন্দোলনের কৃষক নেত্রী ইলা মিত্রের পৈত্রিক ভিটা অধিগ্রহনের জন্য সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ঝিনাইদহের শৈলকুপার বাগুটিয়া গ্রামে তার পৈত্রিক ভিটা। গত ৪ জানুয়ারি সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রনালয় পুরার্কীতি হিসেবে সেই বাড়িটি সংরক্ষনের জন্য গেজেট প্রকাশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টদের এজন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে। 

জানা গেছে, বৃটিশ সরকারের সেসময়কার বাংলার একাউন্টেন্ট ছিলেন জেনারেল নগেন্দ্র নাথ সেন। ঝিনাইদহের শৈলকুপার বাগুটিয়া গ্রামে ছিল তার বাড়ি। ইলা মিত্র তার মেয়ে। ১৯২৫ সালের ১৮ অক্টোবর জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। ১৯৪০ সালে জাপান অলিম্পিকের জন্য নির্বাচিত হন ইলা। যুদ্ধের কারনে ওই বছরে বিশ্ব অলিম্পিক হয়নি। ১৯৪৪ সালে বেথুন স্কুল এন্ড কলেজ থেকে বিএ এবং ১৯৫৮ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ও সংস্কৃতি ভাষায় এমএ ডিগ্রী লাভ করেন ইলা মিত্র। ১৯৪৫ সালে বিয়ে হয় তার। 

১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত রাজশাহীর নবাবগঞ্জ অঞ্চলে তে-ভাগা আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন ইলা মিত্র। কৃষক আন্দোলন সংগ্রামের সময় পুলিশের হাতে আটক হয়ে নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে তাকে। ১৯৪৬ সালের দিকে দিনাজপুরের হাজি দানেশের প্রচেষ্টায় তে-ভাগা আন্দোলন শুরু হয়। সে সময় স্বামী কমরেড রমেন্দ্র মিত্রের সঙ্গে ভারতে মালদহের নাবাবগঞ্জ থানার রামচন্দ্র হাটের শ্বশুরের জমিদার বাড়ি ছেড়ে দিনাজপুর চলে আসেন। 

১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে সাধারন মানুষের মাঝে ইলা মিত্রকে নিয়ে নতুন করে জাগরণ সৃষ্টি হয়। বার বার দাবী উঠে তার পৈত্রিক ভিটা দখল মুক্ত করার। কারণ বাড়িটি একটি চক্র স্থানীয় ভূমি ও তহশীল অফিসকে ম্যানেজ করে নানা কৌশলে ভোগ দখল করে আসছে। এই দখলবাজরা ভুয়া কাগজ পত্রও তৈরী করেছে। এ অবস্থায় জেলাবাসি ইলা মিত্রের ম্মৃতি সংরক্ষনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছিলেন। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে দফায় দফায় প্রতিবেদন ছাপানো হয়। কিন্তু বছরের পর বছর আমলাতন্ত্রিকতা ও আইনি জটিলতায় বিষয়টি আটকে ছিল। 

শেষ পর্যন্ত সরকার বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় জেলাবাসি খুশী। তবে কাজটি কতদিনের মধ্যে শুরু করা হবে, তা নিয়ে এখানো আশংকা কাটেনি। ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন দ্রুত কাজটি শুরু করবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছে ইলা মিত্র ম্মৃতি সংরক্ষন কমিটি।