অসুস্থ নারীকে ভণ্ড কবিরাজের ‘ধর্ষণ চিকিৎসা’

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০১৭, ১৬:৪৪

জাগরণীয়া ডেস্ক
কবিরাজ সাইদুর কর্তৃক এক বৃদ্ধাকে চিকিৎসার নামে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা কোমর-পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রাখার পাঁচ বছর আগের সেই ছবি

চিকিৎসার নামে এক কবিরাজের বিরুদ্ধে অসুস্থ এক নারীকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ১৩ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) রাতে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার গোপালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।

১৫ এপ্রিল (শনিবার) রাতে ওই নারীকে (৩০) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।

এরপর ঘটনা জানাজানি হয়। নির্যাতিত ওই নারীর বাড়ি উপজেলার দেওলিয়া গ্রামে। তাকে ধর্ষণের পর থেকে অভিযুক্ত কবিরাজ সাইদুর রহমান দেওয়ান (৪৫) লাপাত্তা। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ।

ওসি নাসিম আহমেদ জানান, রামেক হাসপাতালের ওসিসি থেকে তাকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে। ওসিসি থেকে একটি এজাহার থানায় পাঠানোরও প্রস্তুতি চলছে। সেটি থানায় গেলেই মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হবে। এর পাশাপাশি কবিরাজ সাইদুরকে আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানান ওসি।

ওই গৃহবধূর স্বামীর বরাত দিয়ে ওসি জানান, কিছু দিন ধরে অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন ওই গৃহবধূ। স্থানীয়দের পরামর্শে ১৩ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় তার স্বামী তাকে কবিরাজ সাইদুরের কাছে নিয়ে যান। এ সময় কবিরাজ সাইদুর জানান, ওই নারীর শরীরের পাগলা জ্বীন ভর করেছে। রাতে ‘চিকিৎসার’ মাধ্যমে জ্বীন তাড়াতে হবে।

এ সময় কবিরাজ সাইদুর ওই নারীকে বাড়িতে রেখে সবাইকে চলে যেতে বলেন। তার কথামতো ওই নারীর স্বামী তাকে কবিরাজের বাড়িতে রেখে চলে যান। ঘণ্টা দুয়েক পর তিনি গিয়ে দেখেন, তার স্ত্রী আরও অসুস্থ গেছেন। এ সময় ওই গৃহবধূ তাকে ধর্ষণের কথা জানান। এ নিয়ে ওই বাড়িতে হট্টগোল শুরু হলে কবিরাজ সাইদুর কৌশলে পালিয়ে যান।

এরপর ওই গৃহবধূকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে তার অবস্থার আরও অবনতি হলে তাকে রামেক হাসপাতালের ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। কবিরাজ সাইদুরের এমন কাণ্ডে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

কবিরাজ সাইদুর রহমান দেওয়ান ২০১১ সালের আগস্টে রাহেলা বেগম (৭২) নামে পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক বৃদ্ধাকে চিকিৎসার নামে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা কোমর-পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে রেখেছিলেন। এ নিয়ে পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মহিলা বিষয়ক মন্ত্রণালয় বাগমারা থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়।

এরপর পুলিশ তাকে থানায় ডেকে পাঠায়। সাইদুর আর কবিরাজি করবেন না বলে সে সময় পুলিশের কাছে তওবা করেছিলেন। এর প্রায় পাঁচ বছর পর ভণ্ড এই কবিরাজ এবার চিকিৎসার নামে অসুস্থ নারীকে ধর্ষণ করলেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত