লিটনের স্ত্রীকে বিচারের প্রতিশ্রুতি আইজিপির

প্রকাশ : ১১ জানুয়ারি ২০১৭, ১৩:৫৫

জাগরণীয়া ডেস্ক

দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে এমপি লিটনের হত্যাকারীদের শনাক্ত করে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পুলিশপ্রধান এ কে এম শহীদুল হক।

মঙ্গলবার গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গা আব্দুল হক ডিগ্রি কলেজ মাঠে জেলা পুলিশের আয়োজনে এক আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় নিহতের স্ত্রী সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে এ ওয়াদা করেন তিনি।

পুলিশ প্রধান বলেন, “আপনার যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে, তা হয়ত আমরা ফিরিয়ে দিতে পারব না। আপনার কাছে ওয়াদা করে গেলাম, এ খুনিদের বের করে বিচারের ব্যবস্থা করব।”

২০১৩ সাল থেকে দেশে যত হত্যাকাণ্ড, সন্ত্রাসী কার্যক্রম হয়েছে প্রতিটি ঘটনা পুলিশ শনাক্ত ও উদঘাটন করতে পেরেছে দাবি করে লিটনের খুনিদেরও গ্রেপ্তার করার আশা প্রকাশ করেন শহীদুল হক। 

তিনি বলেন, “মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের খুনিদের শনাক্ত করে অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে। অপরাধ করে কেউ রক্ষা পায়নি। এমপি লিটনকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হলেও অপরাধীরা বেঁচে যেতে পারবে না।”

একাত্তরে পুলিশ বাহিনীর সদস‌্যদের পাকিস্তানি সেনাদের রুখে দাঁড়ানোর ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা সেই পুলিশের উত্তরসূরি। আমাদের সেই কমিটমেন্ট নিয়ে আমরা সংসদ সদস্য লিটনের হত্যাকারীকে অবশ্যই বের করব। সময় লাগতে পারে। কিন্তু আমি আপনাদের কাছে পুলিশ প্রধান হিসাবে ওয়াদা করে গেলাম। আমরা এই অপরাধীদের খুঁজে বের করে তাদেরকে বিচারের ব্যবস্থা করব।”

বক্তারা সুন্দরগঞ্জকে ‘শান্তিপ্রিয় এলাকা’ বলার পর আইজিপি বলেন, “যেখানে চার পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সেই এলাকা শান্তির জনপদ হতে পারে না। সে এলাকায় স্বাধীনতাবিরোধী চক্র আছে। যারা এ দেশের স্বাধীনতা চায় নাই। মুক্তিযুদ্ধে যারা পাক বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে এদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। তাদের আধিপত্য যেসব এলাকায় আছে; সে সন্ত্রাস হয়। ওই এলাকা সন্ত্রাসী জনপদ।”

তবে এলাকার মানুষ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় সুন্দরগঞ্জকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিমুক্ত জনপদ হিসেবে গড়ে তুলতে চান বলে জানান তিনি।

আইজিপি বলেন, “অতীতে এদেশে যত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড উদঘাটন করে, অপরাধীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। অনেকে পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে মারা গেছে। পুলিশের অপারেশনে মারা গেছে। কেউ অপরাধ করে রেহাই পায়নি। এমপি লিটনকে যারা হত্যা করেছে, তারা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড করেছে। কাজেই আপনার মনে করেন না যে, হত্যা করে বেঁচে যাবেন।”

এ জন্য তিনি সুন্দরগঞ্জবাসীর সহযোগিতা চান। সেইসঙ্গে গোপন তথ্য দাতার পরিচয় গোপন রাখার প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।

সভা শেষে আইজিপি লিটনের বাড়ি গিয়ে তার কবর জিয়ারত করেন এবং শোকাহত পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।

উল্লেখ্য, গত ৩১ ডিসেম্বর সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শাহবাজ গ্রামে বাড়িতে ঢুকে গুলি করা হয় সাংসদ লিটনকে। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

ওই ঘটনায় লিটনের বোন তাহমিদা বুলবুল বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ৪/৫ জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত