মেয়েকে বিয়ে করতে না পেরে মাকে হত্যা

প্রকাশ : ০৫ জুন ২০১৮, ১৫:০৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ও পাঁচ ছেলেমেয়েকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন প্রবাসী রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী আবুল বাশার। ঢাকার উপকণ্ঠে টঙ্গীর মধ্য আরিচপুর আবাসিক এলাকার পাঁচতলা বাড়ির মালিক তিনি। গত বছর জুন মাসে ছেলেকে বিয়ে করাতে সপরিবারে আরিচপুরের বাড়ির দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটে ওঠেন এই প্রবাসী পরিবার। তাদেরই বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক (কেয়ারটেকার) মো. সোহেল। বাড়ির মালিক হবার লোভে মালিকের মেয়েকে বিয়ে করার পরিকল্পনা করেছিল সোহেল। কিন্তু বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়ে মনোয়ারাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সোহেল।

গত ৭ জুন বাসা ভাড়া নেওয়ার কথা বলে ওই বাড়িতে তৃতীয় তলার একটি খালি ফ্ল্যাটে মনোয়ারাকে কুপিয়ে ফেলে রেখে যায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত। এ ঘটনায় আবুল বাশার বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক মো. সোহেলসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে টঙ্গী থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলার পর পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, মনোয়ারার মেয়েকে বিয়ে করে পাঁচতলা বাড়িটির মালিক হত চেয়েছিলেন সোহেল। কিন্তু বিয়ের প্রস্তাবে প্রত্যাখ্যাত হয়ে তিনি মনোয়ারাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। 

এদিকে হত্যাকাণ্ডের পর অভিযুক্ত সোহেল পালিয়ে গেলেও র‍্যাব তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। কিন্তু তার কাছ থেকে হত্যা-সংশ্লিষ্ট কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি। পরবরর্তীতে মামলার বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সদর দপ্তর টঙ্গী থানা থেকে মামলার তদন্তভার পিবিআইকে দেয়। পিবিআই তদন্তভার পাওয়ার পর প্রথমে হত্যাকাণ্ডের কোনো সূত্র খুঁজে না পেলেও পরে সন্দেহভাজন হিসেবে স্থানীয় সন্ত্রাসী স্বপন মিয়া ও আরিফ খানকে গ্রেপ্তার করে। তাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।

তদন্ত কর্মকর্তারা বলেন, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে স্বপন ও আরিফ খান বলেছেন, সোহেলের সঙ্গে তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। হত্যাকাণ্ডের দুই-তিন দিন আগে সোহেল মাহমুদ মীর ওরফে খান্ডে বাবু মনোয়ারাকে খুনের জন্য তাদের কাছে এসে পাঁচ লাখ টাকা চুক্তি করেন। হত্যাকাণ্ডের দিন সকালে সোহেল তাদের দুই লাখ টাকা দিয়ে যান এবং বাকি টাকা হত্যাকাণ্ডের পর দেওয়া হবে বলে কথা দেন। কিন্তু সেই টাকা সোহেল তাদের আর দেননি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক মোস্তফা খায়রুল বাশার বলেন, গ্রেপ্তার সোহেল, স্বপন মিয়া ও আরিফ খান বর্তমানে কারাগারে আছেন। তবে ঘটনার পর আরেকজন সোহেল মাহমুদ পালিয়ে গেছেন।

পুলিশ সুপার নাসির আহমেদ শিকদার জানান, দু-এক দিনের মধ্যে সোহেলসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দেওয়া হবে। অভিযোগপত্রভুক্ত অন্যরা হলেন ভাড়াটে খুনি সোহেল মাহমুদ মীর, স্বপন মিয়া ও আরিফ খান।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত