‘বাংলা নিয়ে এত অনীহা কেন আমাদের’

প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ২৩:১৩

জাগরণীয়া ডেস্ক

বাংলা ভাষা নিয়ে আমাদের এত অনীহা কেন আমাদের। এই অনীহা যেন ব্যধির মত ছড়িয়ে পড়েছে-বললেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা।

২৪ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) বিকেলে মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলা ভাষার ব্যবহারের গুরুত্ব কম দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নাকি বাংলা ভাষায় পড়ানো হয় না। এটা কেন? কেন বাংলায় পড়ানো হবে না। আমরা দাওয়াতের কার্ডও এখন বাংলা ভাষায় লিখতে চাই না। এটা কেন হচ্ছে জানি না। বিয়ের কার্ডটাও কেন বাংলা ভাষায় লেখা হবে না।

রায় ইংরেজিতে লেখা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উচ্চ আদালতের রায় ইংরেজিতে লেখা হয়। আমাদের অনেকে আছেন ইংরেজি বোঝেন না। তার উকিল যা বোঝাবেন তাকে তা বুঝতে হচ্ছে। সেই উকিল সাহেব ঠিকমতো বোঝাতে পারছেন নাকি আরও কিছু টাকা খসানোর বা পকেট খালি করার জন্য অন্যভাবে বোঝাচ্ছেন তা কিন্তু তার মক্কেল বুঝতে পারেন না। তবে, এখন নিম্ন আদালতে মোটামুটি বাংলায় রায় লেখা শুরু হয়েছে।

দ্বিতীয় ভাষা শিক্ষার ওপর অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা বলেন, ইংরেজি আন্তর্জাতিক ভাষা, কাজেই আমরা ইংরেজি শেখার বিপক্ষে নই। কিন্তু,যে ভাষার জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি তার চর্চা করবো না কেন? কাজেই বলবো, এতে দেশে-বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে। তবে, সঙ্গে সঙ্গে মায়ের ভাষা—যে ভাষার জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি তার চর্চাও থাকতে হবে। এ বিষয়ে পরিবার থেকেই উৎসাহিত করতে হবে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউশন গঠনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী এখন বাংলাদেশের ওপর দায়িত্ব পড়েছে মাতৃভাষাকে রক্ষা ও সংরক্ষণ করার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের যারা মন্ত্রী বানিয়েছিল, লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত পতাকা এদের হাতে তুলে দিয়েছিল, তাদের ব্যাপারে জাতিকে সচেতন থাকতে হবে। তাদেরকে ক্ষমা করবেন না। জাতি যেন কোনদিন তাদের ক্ষমা না করে—জাতির প্রতি আজকের দিনে আমার এটাই আবেদন থাকবে।

এখন মানুষ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিতে ভয় পায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন একটি সময় দেখেছি মানুষ নিজে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিতে সাহস পেতেন না। সরকারি চাকরি পেতে মুক্তিযোদ্ধা কথাটি লিখতেও ভয় পেতেন। কারণ, তাহলে চাকরি পাবেন না। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর এই অবস্থা বাংলাদেশে সৃষ্টি হয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ ৯ বছর আমরা সরকারে থাকার কারণে এখন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিতে মানুষ গর্ববোধ করেন। তারা এখন আর ভীত সন্ত্রস্ত হন না। এখন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসগুলো সামনে আসছে। মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরে এসেছে। এই আত্মবিশ্বাসটা যেন হারিয়ে না যায়। এমন কোনও অন্ধকারে আমরা যেন আবার না পড়ি। এই পরিবেশ যেন বাংলার মাটিতে আর না আসে সে ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আবার যে সেই ধরনের বিপদে আমরা পড়ে না যাই।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আব্দুল মতিন খসরু, ড. আব্দুর রাজ্জাক, আফজাল হোসেন প্রমুখ।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত