রূপা গণধর্ষণ ও হত্যা মামলা: ৪ জনের ফাঁসি

প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ১৪:২৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজের শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা রূপা গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ৪ জনের ফাঁসি ও একজনের সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

১২ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) টাঙ্গাইল অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ নং আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এ রায় দেন। রায়ের সময় আসামিরা কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলো, ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামিম (২৬), আকরাম (৩৫ ) , জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫)। আর বাসের সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। 

এর আগে ৩ জানুয়ারি মামলার বাদী মধুপুরের অরণখোলা পুলিশ ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলামের সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে চাঞ্চল্যকর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। গত ৪ ফেব্রুয়ারি এই মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। ২৩ জানুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক কাইয়ুম খান সিদ্দিকীর সাক্ষী ও জেরার মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ হয়। এ মামলায় চিকিৎসক, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটসহ ২৭ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। ৩১ জানুয়ারি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষ।

রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ পিপি একেএম নাছিমুল আক্তার আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিষয়ে আইনগত যুক্তি উপস্থাপন করেন। তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী আতাউর রহমান আজাদ, আব্দুল করিম ও এস আকবর খান।

অপরদিকে আসামিদের আইনজীবী ফারুক আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন ও শামীম চৌধুরী প্রত্যেক আসামিকে নির্দোষ উল্লেখ করে তাদের বেকসুর খালাস দাবি করে আইনগত যুক্তি তুলে ধরেন। উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে বিচারক ১২ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন ধার্য করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট রাতে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রুপাকে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ করে পরিবহণ শ্রমিকরা। বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে রুপার মৃতদেহ ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাত পরিচয় নারী হিসেবে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রুপার মৃতদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।

পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে তার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে ছবির ভিত্তিতে তাকে শনাক্ত করেন। গত ১৫ অক্টোবর এ মমলার তদন্তকারী কর্মকর্তা টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে ৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অভিযোগপত্র দাখিলের পর দিন ১৬ অক্টোবর মামলাটি বিচারের জন্য নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলী করা হয়। গত ২৫ অক্টোবর আদালত এ অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন।

২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা প্রত্যেকেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। 

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত