রূপা গণধর্ষণ ও হত্যা: দ্বিতীয় দফায় সাক্ষ্যগ্রহণ

প্রকাশ | ০৭ জানুয়ারি ২০১৮, ১৮:৩১

অনলাইন ডেস্ক

টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ল’ কলেজের ছাত্রী জাকিয়া সুলতানা রূপাকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটির আদালতে দ্বিতীয় দফায় স্বাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।

৭ জানুয়ারি (রবিবার) সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন। এতে স্বাক্ষ্য প্রদান করেন মোট ৪ জন। এ স্বাক্ষ্যগ্রহণের প্রথমে স্বাক্ষ্য দেন মামলার স্বাক্ষী আব্দুর রশিদ, ২য় স্বাক্ষী দেন প্রবির এন কুমার, ৩য় স্বাক্ষী দেন মোঃ আবুল হোসেন ও ৪র্থ স্বাক্ষী দেন মোঃ রহিজ উদ্দিন।

এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিশেষ পিপি এ কে. এম মোঃ নাছিমুল আখতার জানান, রবিবার সকাল ১১টা ৪৫ মিনিটে টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আবুল মনসুর মিয়া এ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শুরু করেন। এতে স্বাক্ষ্য প্রদান করবেন মোট ৯ জন এর মধ্যে মামলা বাদী ও স্থানীয় ৮ জন। দ্বিতীয় দিনের এ স্বাক্ষ্যগ্রহণের প্রথম পর্ব চলে সকাল ১১টা ৪৫ মিনিট থেকে দুপুর ১ পর্যন্ত।

আগামীকাল সোমবার বাকী ৪ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে বলে আদেশ দেন আদালতের বিচারক। এরা হলেন লাল মিয়া, হাসমত আলী, আব্দুর রৌফ ও জয়নাল আবেদীন। এর আগে বুধবার প্রথমও স্বাক্ষ্য দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আমিনুল ইসলাম। আগামী সোমবার ৪ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে বলে আদেশ দেন আদালতের বিচারক।

এ সময় তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ছোঁয়া পরিবহনের সহকারি শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীর (৫৫) বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের (সংশোধিত ২০০৩) ৯ এর তিন ধারায় গণধর্ষণের অভিযোগ এবং দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় হত্যার অভিযোগ, ২০১ ধারায় লাশ গুমের অভিযোগ এবং ৩৪ ধারায় সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে চার্জশিটে। চার্জশিটে ৩২ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এদের মধ্যে পুলিশ, চিকিৎসকসহ পাঁচ-ছয়জন সরকারি কর্মকর্তা রয়েছেন।

এ মামলায় রাষ্ট্র পক্ষের সহায়তা ছিলেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার টাঙ্গাইল জেলার সমন্বয়কারি এডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ। আসামি পক্ষের আইনজীবি ছিলেন শামীম চৌধুরী দয়াল ও ঢাকা জর্জ কোর্টের এডভোকেট মোঃ দেলোয়ার হোসেন।

উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট বগুড়া থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রূপাকে চলন্ত বাসে ধর্ষণ করে পরিবহন শ্রমিকরা। বাসেই তাকে হত্যার পর মধুপুর উপজেলায় পঁচিশ মাইল এলাকায় বনের মধ্যে রূপার মৃতদেহ ফেলে রেখে যায়। এলাকাবাসীর কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ওই রাতেই অজ্ঞাত পরিচয় মহিলা হিসেবে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে রূপার মৃতদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে মধুপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।

পত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে তার ভাই হাফিজুর রহমান মধুপুর থানায় গিয়ে ছবির ভিত্তিতে তাকে শনাক্ত করেন। ২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কের ছোঁয়া পরিবহনের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তারা প্রত্যেকেই আদালতে হাজির করা হয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। মামলার আসামিরা প্রত্যেকেই এখন টাঙ্গাইল কারাগারে রয়েছে।