যৌতুক না দেয়ায় স্ত্রীকে বের করে দিয়েছে স্বামী

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ১৫:৪২

জাগরণীয়া ডেস্ক

যৌতুকের দেড় লাখ টাকার দাবিতে শারমিন আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূকে মারপিট করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে স্বামী। ফলে ওই গৃহবধূ শ্বশুর বাড়ির উঠানে দশ মাস বয়সী মেয়েকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন। ঘটনাটি ঘটেছে ১৯ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) রাতে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়ভিটা গ্রামে।

২০ সেপ্টেম্বর (বুধবার) সকালে সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের দক্ষিণ বড়ভিটা গ্রামের শফিউল ইসরামের ছেলে জাকির হোসেন চার বছর আগে বাহাগিলি ইউনিয়নের হাজিপাড়া গ্রামের সোনামিয়ার একমাত্র মেয়ে শারমিনকে দেখে পছন্দ করে বিয়ের প্রস্তাব দেন। মেয়ের বাবা ওই বিয়েতে রাজী না থাকায় জাকির হোসেন মেয়ের বাড়িতে চার দিন অবস্থান করে। সোনামিয়া অবশেষে মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে তাদের বিয়ে দেন। বিয়ের সময় জাকিরকে যৌতুক হিসাবে নগদ দুই লাখ টাকা প্রদান করেন।

কিন্তু ওই বিয়েতে বাদ সাধেন ছেলের বাবা শফিউল ইসলাম। তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে হওয়ায় তিনি মেনে নেননি। জাকির উপায়ন্তর না পেয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে সংসার জীবন শুরু করেন। কিছুদিন পর পরিবারের সাথে জাকিরের সম্পর্ক স্বাভাবিক হলে শফিউল ছেলেকে প্রস্তাব দেয় ওই বউকে তালাক দিলে তাকে জায়গা জমি সব দিয়ে সুন্দর মেয়ে দেখে বিয়ে দেবেন। এরপর থেকে জাকির অকারণে শারমিনের উপর নির্যাতন করে চলছে বলে জানা যায়।

গৃহবধূ শারমিন আক্তার বলেন, ঘটনার দিন মঙ্গলবার রাতে আমার স্বামী জাকির, আমার বাবার কাছ থেকে যৌতুকের আরো দেড় লাখ টাকা নিয়ে আসতে বলেন, এতে আমি রাজী না হলে রাত ১২টার দিকে আমাকে মারপিট করে ঘরে তালা দিয়ে সে উধাও হয়ে যায়। আমি দশ মাসের মেয়েকে নিয়ে আমার শ্বশুর বাড়িতে আসি। আমিসহ প্রতিবেশীর অনেকে আমার শ্বশুর-শাশুড়িকে ডাকার পরেও তারা বাড়ির দরজা খুলে দেয়নি। সকালে দরজায় তালা দিয়ে তারাও সরে পড়েছে।

এ ব্যাপারে জাকির কিংবা তার বাবা-মার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আবু সায়েব ও ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য অলিউর রহমান বলেন, রাত ১২টার দিকে যখন জাকির তার স্ত্রীকে বাড়ি থেকে বের করে দেয় তখন আমরা এলাকাবাসী একজন গ্রাম পুলিশসহ মেয়েটিকে নিয়ে তার শ্বশুর বাড়িতে যাই। তার শ্বশুর-শাশুড়িকে অনেক ডাকাডাকির পরেও তারা সাড়া দেয়নি।

কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বজলুর রশীদ বলেন, ওই ওয়ার্ডের মেম্বর আমাকে ঘটনাটি রাতেই জানিয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সূত্র: ইত্তেফাক

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত