৪ বছরে আদিবাসীদের ২৮ হাজার একর ভূমি দখল

প্রকাশ : ১৬ জুলাই ২০১৭, ১৭:১৮

জাগরণীয়া ডেস্ক

২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সাম্প্রদায়িক হামলাসহ নানাভাবে আদিবাসীদের ২৮ হাজার ৩৯০ একর ভূমি অবৈধভাবে দখল করেছে বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহল। শুধু তাই নয়, ওই সময়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে ৩৬৪ জন নারী।

১৬ জুলাই (রবিবার) সকাল সাড়ে ১০টায় ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার ভবনের আজিমুর রহমান কনফারেন্স হলে ‘ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক প্রিভিউ (ইউপিআর) অ্যান্ড দ্যা রাইটস অফ ইনডিজেনাস পিপলস ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় কেপাং ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

কেপাং ফাউন্ডেশনের প্রজেন্ট কো-অর্ডিনেটর বাবলু চাকমা জানান, গত দু’এক বছরে ধর্মীয় উন্মদনা ও উগ্র সাম্প্রদায়িকতা তৈরি করে আদিবাসীদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ভূমিদখল, হত্যা ইত্যাদি ঘটনা ঘটেছে। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ২৮ হাজার ৩৯০ একর ভূমি দখল করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৬ সালেই দখল হয়েছে ১৫ হাজার ৪৩০ একর জমি। ২০১৬ সালে আদিবাসীদের ১ হাজার ২০৮টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ হয়েছে।

২০১৩ সাল থেকে চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত ৩৬৪ জন নারী নানা সহিংসতার শিকার হয় বলে জানান বাবলু চাকমা। তিনি বলেন, ইউপিআর অধিবেশনে বাংলাদেশে গত দুটি চক্রে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিটি বাস্তবায়নের সুপারিশটি হাতে নেন।

এ পর্যন্ত পার্বত্য চুক্তির ৭২টি ধারার ৪৮টি বাস্তবায়ন হয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসে লংগদুতে তিন গ্রামে স্যাটেলারদের হামলায় ৩ শতাধিক পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার কোনো সহায়তাতো পায়নি বরং আদিবাসীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতা আমরা লক্ষ করেছি।

আলোচনা সভায় আদিবাসী ক্লাস্টার ডেভলাপমেন্ট ফোরামের সভাপতি অজয় এ ম্রি বলেন, আদিবাসীদের ওপর নানা ধরনের হামলা হচ্ছে। তাদের বাড়ি ঘরে আগুন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকার যেন দেখেও দেখছে না। এসব ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে না। সরকার যেন দিন দিন আদিবাসীদের কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা আশা করছি সরকার এস অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

আলোচনা সভায় সরকারের উদ্দেশ্য ৬ দফা সুপারিশ মালা তুলে ধরেন আদিবাসীরা।

সুপারিশ সমূহ হলো- রোডম্যাপ ঘোষণার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়ন করা, আইএলও কনভেনশন নং ১৬৮ অনুস্বাক্ষর করা, সমতলের ভূমি সুরক্ষায় পৃথক মন্ত্রণালয় গঠন করা, আদিবাসী নির্যাতনের শিকার নারীদের আইনি সহায়তা দেওয়া, আদিবাসী নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা, আদিবাসী সুরক্ষা আইন প্রনয়ন করা।

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য বানচিতা চাকমা।

বক্তারা জানান, সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে আধিবাসীদের জন্য নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিলো। এসব প্রতিশ্রুতি এখন কেবলই প্রতিশ্রুতিই রয়ে গেছে। দু’একটি ক্ষেত্রে সামান্য অগ্রগতি সরকার দেখালেও বেশিরভাগ বিষয়ে কার্যকর অগ্রগতি সাধনে সরকারের স্বদিচ্ছার অভাব রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত